নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়ার ঘরে
আগুন দেওয়ার পর তাঁকে নিয়ে গতকালই
লিখেছিলাম, ‘কমান্ডো, খবরদার, তোমার এক
ফোঁটা চোখের জল যেন গড়িয়ে না-পড়ে...’ [১]। শপথ আমার লেখালেখির, আমি কল্পনাও করিনি যে আজ আমাকে এ লেখাটা
লিখতে হবে! মাদকসন্ত্রাসীরা আজ কুপিয়েছে এই কমান্ডোকে।
ও কমান্ডো, আমরা ভুলিনি
১৯৭১ সালে যুদ্ধের পর সবাই যেখানে জমা দিয়েছিল, থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল, মেশিনগান
সেখানে তুমি জমা দিয়েছিলে চার-চারটা লিমপেট মাইন! কেবল এমন একটা মাইন দিয়েই উড়িয়ে দেয়া সম্ভব ছিল
গোটা এই পৌরসভাকে।
ও কমান্ডো, একটা মাইন
বাঁচিয়ে রাখতে পারলে না? তাহলে সব কিছুর সঙ্গে উড়ে যেতাম আমিও। অন্তত তোমার এভাবে এই পড়ে
থাকার দৃশ্যটা অন্তত আমাকে দেখতে হতো না। জমা দেওয়া যে কমান্ডো-নাইফটা দিয়ে পেট চিরে
ফেলেছিলে হাঙ্গরের সেই কমান্ডো নাইফ দিয়ে
ফালা-ফালা করে ফেলতে পারতে এই সমস্ত সন্ত্রাসীদেরকে।
আধপোড়া কাগজগুলো থেকে উদ্ধার হওয়া আরও কিছু কাগজ:
গতকাল তাঁর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর আবারও এফআইআর এবং ইউএনওকে লেখা তাঁর কাগজ:
সহায়ক সূত্র:
১. ‘কমান্ডো, খবরদার, তোমার একফোঁটা চোখের জল যেন গড়িয়ে না-পড়ে...’: http://www.ali-mahmed.com/2014/01/blog-post_24.html
...ইনবক্সে, মেইলে অনেকে আলাদা করে জানতে চেয়েছেন এই কমান্ডোর বর্তমান অবস্থা, এই সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য।
তাদেরকে সবিনয়ে বলি, এই
বিষয়টা পোস্টের মন্তব্যে জানতে চাইলে আমার জন্য সুবিধা হতো। কারণ জনে জনে আলাদা করে উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য অনেকখানি
সমস্যা হয়ে পড়ে।
সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি,
এই কমান্ডো এখনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। তাঁকে এখনও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। কারণ
তাঁর শরীরের প্রচুর ছুঁরির ক্ষত রয়ে গেছে। তবে ক্রমশ অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
তাঁর যে-সমস্ত জরুরি
কাগজপত্র পুড়ে গেছে- বিশেষ করে ১৯৭১ সালের দলিলপত্র তা তো আর ফিরে পাওয়া সম্ভব না।
তবে বাঁচোয়া, পূর্বেই তাঁকে নিয়ে প্রচুর লেখালেখির সূত্রে বেশ কিছু কাগজ আমার ব্লগসাইটে
রয়ে গেছে।
তাঁর ঘরের অনেকটা অংশ পুড়ে
গেছে। এর আশু সংস্কার প্রয়োজন। সবটার কোনো গতি আপাতত না-হলেও খানিকটা চেষ্টা চলছে।
এবং আশার কথা হচ্ছে,
প্রশাসন এখন নড়েচড়ে বসেছে। যারা তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা করেছিল তাদের
কাউকে-কাউকে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
আমি বিশেষ করে এখানকার
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই যিনি খবর পাওয়ামাত্র ঘটনাস্থলে এবং পরের
দিন তাঁকে দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন।
...
আমি পূর্বেই উল্লেখ
করেছিলাম, গোটা এই দেশের কোথাও এই কমান্ডোর নিজস্ব এক ইঞ্চি জায়গাও নেই। তিনি যে
সরকারি জায়গায় ছাপরা তুলে থাকেন সেটার বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেটা ২০১১ সালের কথা, এখন ২০১৪ চলছে- এখনও
কিছুই হয়নি! এই দেশে অনেকগুলো বাড়ি থাকার পরও সাংসদ-মন্ত্রীরা চোখের পলকে
বাড়ি-প্লট পেয়ে যান কিন্তু এক টুকরো জায়গার ব্যবস্থা হয় না এই অগ্নিপুরুষের জন্য।
No comments:
Post a Comment