শফিক রেহমান। অতি চৌকশ একজন মানুষ! এই মানুষটার কোন বিষয়ে খোঁজ আছে এটা জিজ্ঞেস না-করে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে কোন বিষয়ে খোঁজ নেই! ক্ল্যাসিক বই, দূর্লভ মুভি, অসাধারণ গান; কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলি?
আহ, একজন লেখক বানাবার মেশিন- যে মানুষটার মাথায় কিলবিল করত অভিনব সব আইডিয়া।
অবশ্য তার ভিনসেন্ট পিউরিফিকেশনের নামে কুৎসিত রসিকতা [১], [২]
এবং রগরগে লেখা নির্বাচন, প্রকাশ করাটা আপাতত নাহয় সরিয়ে রাখছি।
একদা তরুণদের ‘স্বপ্নবাজ’ এই মানুষটা ক্রমশ আপাদমস্তক একজন দলবাজে পরিণত হয়েছিলেন এটা আমরা জানতাম কিন্তু...? জানুয়ারি মাসের ‘মৌচাকে ঢিল’ নামের সাপ্তাহিকের যে প্রচ্ছদ করেছেন তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন এ
কথাটা, ‘অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলনে অচল দেশ’। এর সঙ্গে যে ছবিটা গেছে সেটা হচ্ছে, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া একটা ট্রেনের ছবি।
ভেতরে তিনি আরও লিখেছেন:
"...তাই জনগণকে রাষ্ট্র, সরকারি দলের মিলিত সন্ত্রাসের মোকাবেলা করতে হচ্ছে সন্ত্রাস দিয়ে...তবে এখন সে সময়ের চেয়ে অনেক বেশি গাছ কাটা এবং ফিসপ্লেট তোলা হচ্ছে। এখন সরকারি বাহিনীকে ঠেকাতে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা কেটে রাখছে...। ...এই স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন অভূতপূর্ব...।"এরপর এই মানুষটার সম্বন্ধে একটা কথাই মনে আসে যে, মানুষটার গ্রে-মেটার এবং ‘ইয়েলো মেটার’ জড়াজড়ি হয়ে গেছে। এই মিশ্রণে মানুষটাকে হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখে বুকের গভীর থেকে মানুষটার প্রতি করুণার শ্বাস বেরিয়ে আসে। আলাদা করা মুশকিল হয়ে পড়ে মানুষটার ক্যাটক্যাটে হলুদ টাইয়ের সঙ্গে মিশে থাকে হলুদ পুরীষ!
আফসোস, প্রতিভার কী এক নিদারূণ অপচয়! ‘দলবাজি’ করলে বুঝি এমনটাই হতে হয়। কালে কালে পেছনে একটা লেজ গজায় তখন অজান্তেই মুখ থেকে ঘেউ-ঘেউ শব্দ বের হয় যেটা তিনি পূর্বেই আমেরিকায় গিয়ে করে এসেছিলেন [৩]।
শফিক রেহমান কেবল ঘেউ ঘেউ করলে তেমন কঠিন সমস্যা ছিল না, সমস্যাটা অন্যত্র। যে প্রাণীটা ঘেউ ঘেউ করে তার ঘেউ ঘেউ শব্দে বিরক্তি আসে এ
সত্য কিন্তু যখন কামড় দিয়ে মানুষের শরীরের বিষ ছড়িয়ে দেয় তখন আর গা ভাসিয়ে চলা সম্ভব হয় না।
শফিক রেহমান নামের যে মানুষটা ছিলেন লেখক বানাবার মেশিন আজ কালের পরিক্রমায় তিনি পরিণত হয়েছেন দানব বানাবার মেশিনে। শফিক রেহমানের মত এই সমস্ত দলবাজের কারখানা থেকে যে সমস্ত জিনিস বের হবে এদের অনেকেই 'পাতি দলবাজ’ হবে এতে তো অবাক হওয়ার কিছু নেই। এরাই তো দলের জন্য শিক্ষাঙ্গনের ছাদ থেকে নিজের বন্ধুকে ফেলে দেবে, চাপাতি দিয়ে বন্ধুকে কোপাবে, পেছন থেকে ছুঁরি মারবে।
এরা আগে দলবাজ, পরে মানুষ (!)। এদের কাছে আপন বাপ, দেশের চেয়ে দল বড়ো, দলের চেয়ে ব্যক্তি...।
No comments:
Post a Comment