হাবিবকে [১] আমি খুঁজছি দু’দিন
ধরে, হন্যে হয়ে। জানি না একে ক্রাচের ব্যবস্থা করে দিয়ে ভালোর মন্দ করলাম কিনা! ওর
ক্রাচ আমার লম্বা পা-কে ছাড়িয়ে যায়। হাবিব উড়ে উড়ে বেড়ায়। আহা, ওর নাগাল পাওয়াটাই
যে দুস্কর হয়ে পড়ল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে একে দেয়া এন্টিবায়োটিক অষুধ বুক-পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমি কোনো
গাতক নই নইলে নির্ঘাত একটা গান বেঁধে ফেলতাম। ‘ঘুরছি আমি, এদিক-ওদিক, বুক-পকেটে
নিয়ে একগাদা ও-ষু-ধ’।
এমনিতে হররোজ স্টেশনে একবার
চক্কর লাগাই কিন্তু গত দুদিন ধরে কয়েকবার করে চরকির মত ঘুরতে হচ্ছে। ফল শূন্য! গতকাল নাকি হাবিবকে দেখা গেছে ট্রেনে
করে ঢাকার দিকে যেতে। যাওয়ার আগে নাকি (ভাত বিক্রেতা মহিলার কথামতে) তাকে গান
গাইতেও দেখা গেছে! আমি খানিকটা আঁচ করতে পারি এ তো বিচিত্র কিছু না। যার কাছে গোটা
বাংলাদেশই নিজের তার কাছে ছোট্ট একটা জায়গায়
আটকে থাকা কেন!
আমি যে পূর্বে লিখেছিলাম, “...আমি আমার অল্প জ্ঞান নিয়ে এই শিশুটির মনঃসমীক্ষণ বোঝার চেষ্টা করছিলাম। ব্যর্থ চেষ্টা- এই নিতল কুয়ায় দেখার ক্ষমতা আমার নাই। আমি কেবল ভাবার
চেষ্টা করছিলাম, বাবুলের কাছে
জীবনটা কেমন?...” অনেকে হয়তো এটা পড়ে হাসি গোপন করেছিলেন,
ধুর, বাপুরে, একটা শিশুর মনের ভাব বোঝার আবার কী আছে! আমি
সলাজে স্বীকার যাই, আমার বোঝার তেমন ক্ষমতা নাই কিন্তু অতীতে এদেরকে নিয়ে খানিকটা
কাজ করার সুবাদে আমি জানি ব্যাপারটা কত দুরূহ। অনেকটা বনের পাখিকে পোষ মানাবার মত।
আমার কারণে হাবিবের চেনা ভুবনটা খানিকটা তছনছ হওয়ায় আমি এর কাছে উপদ্রব বিশেষ, যন্ত্রণা।
বনের পাখি ফেরে, কি ফেরে না আমি
জানি না! কেবল তীব্র আশায় থাকি পথভুলে পাখি ফিরবে। এর প্রতি আমার ভালোবাসায় খাদ
না-থাকলে এও হয়তো ফিরে আসবে। ফিরবে কী! নাকি কারো-কারো কাছে অসহ্য ভালোবাসা সহ্য
হয় না? জানি না-জানি না, জানি না আমি...।
*ঝাড়া তিন দিন পর হাবিবকে পেয়েছি ঠিক এই অবস্থায়, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন:
আমাকে দেখার পর আমি এর মনের ভাবটা খানিকটা বুঝতে পারছিলাম, আরি, এই যন্ত্রণা দেখি আবারও হাজির হয়েছে :)
সহায়ক সূত্র:
*ঝাড়া তিন দিন পর হাবিবকে পেয়েছি ঠিক এই অবস্থায়, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন:
আমাকে দেখার পর আমি এর মনের ভাবটা খানিকটা বুঝতে পারছিলাম, আরি, এই যন্ত্রণা দেখি আবারও হাজির হয়েছে :)
No comments:
Post a Comment