Search

Saturday, February 22, 2014

আভূমি নত হই- হে, অমর মানুষেরা।




শিলচরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি ছবি ঋণ: বিবিসি (http://www.bbc.co.uk/bengali/multimedia/2010/05/100519_saassambangla.shtml)
শিলচর রেলস্টেশনের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি ঋণ: http://en.wikipedia.org/wiki/Shilchar#Language_martyrs
ভাষার জন্য কারা পেরেছে এমন অকাতরে বিলিয়ে দিতে প্রাণ? আমাদের অগ্রজরা পেরেছেন- শহীদ বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর রহমান প্রমূখ । এরা যে কী একটা অসাধারণ কাজ করে দিয়ে গেছেন এটা কল্পনাতেই আসে না। মার মুখের ভাষাটা বলতে না-পারলে কী হতো এটা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। এটা খানিকটা হয়তো আঁচ করতে পারেন সেইসব প্রবাসী যাদের বাংলা বলার তেমন সুযোগ নেই।

আমাদের সেই সমস্ত আগুনমানুষদের পাশাপাশি ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন আসামের ১১ জন বাঙালি তরুণও। ১৯৬১ সালের ১৯ মে অঝোর বৃষ্টিতে গর্জে উঠে আসামের আগুনমানুষেরা, জান দেব, জবান দেব না। এঁরা কেবল বলার জন্যই বলেননি সত্যি সত্যি প্রাণ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন! শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছিল কিন্তু কোনো প্রকার উস্কানি ব্যতীতই ভারতের আধা সামরিক বাহিনী দুপুরে নির্বিচারে গুলি চালায়। নিহত হন কমলা ভট্টাচার্য, শচীন্দ্র পাল, সুকোমল পুরকায়স্থ, কানাইলাল নিয়োগী প্রমূখ এবং আহত হন অনেকে। 

এর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে গোটা ভারত। আসামের শিলচরে বের হয় বিশাল এক শোক মিছিল। শিলচর শ্মশানে আগুন দিয়ে শেষ বিদায় জানানো হয় এই ১১ জন আগুন মানুষকে। আজও সেই শ্মশানে ১১ শহীদের স্মরণে ১১টি স্মতিস্তম্ভ দাঁড়িয়ে আছে।
শিলচর শহরে এবং আসাম বিশ্ববিদ্যালয়েও স্থাপন করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ।

এতে কোনো সন্দেহ নেই বায়ান্ন-এর ভাষা আন্দোলন অসম্ভব রকমের প্রভাব ফেলেছিল আসামের সেই সমস্ত মানুষদের উপর। আমাদের অগ্রজেরা যে আগুন জ্বেলে দিয়েছিলেন তা বুক পেতে গ্রহণ করেছিল আসামের মানুষেরা।

আজ আমি মায়ের ভাষায় কথা বলি, ছাইপাশ লিখি, ঝগড়া করি, পাক খেয়ে উঠা দ্রোহকে সামাল দিতে গালি দেই- বাংলায়। আভূমি নত হই তোমাদের সবার জন্য। কেবল চাতকের হাহাকার- যদি, যদি কোনো এক বিচিত্র উপায়ে তোমাদের আগুনের সামান্য স্ফুলিঙ্গও ছিটকে পড়ে আমাদের গায়ে। যদি...।

No comments: