একদা এই ভদ্রমহিলা এই দেশের
ফার্স্ট লেডি ছিলেন। তিনি যে অভূতপূর্ব ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন এর উদাহরণ; অন্য
গ্রহের কথা জানি না অন্তত এই গ্রহে আছে এমনটা আমি নিজে বিশ্বাস করি না। রাতারাতি
যে তার গর্ভ হয়েছিল এমনই না তিনি তরতাজা একটা সন্তানের জন্মও দিয়েছিলেন। ব্রিগেডিয়ার
শামসুদ্দীন আহমদ (অব.) তখন দৈনিক ভোরের কাগজে (১৩.১০.৯২) একটা ধারাবাহিক লেখা
লিখছিলেন, ‘যখন বঙ্গভবনে ছিলাম’। ওখানে তিনি উল্লেখ করেন:
...রাষ্ট্রপতি আহসানউল্লা আনন্দে উল্লসিত। একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটে গেছে হঠাৎ করেই।
জেনারেল এরশাদের ছেলে হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আনন্দে আত্মহারা। ...তিনি সেনাভবনে
গিয়েছিলেন। বেগম আহসানউদ্দিনও তাঁর সাথে ছিলেন। তবে শুধু জেনারেলর এরশাদের সঙ্গে
সাক্ষাত করে ফিরে এসেছেন। বেগম রওশন এরশাদ
এবং নবজাতক শিশু যে কামরায় ছিলো সেখানে কাউকে ঢুকতে
দেয়া হয়নি।
...বেগম রওশন এরশাদ যে
সন্তানসম্ভবা এবং তাঁর সন্তান ভূমিষ্ট হবার সম্ভাব্য মাস তারিখ সম্পর্কে আগে কোনো
আভাষ পাওয়া যায়নি। না সংবাদপত্রের মাধ্যমে; না লোকমুখে। তাছাড়া মাত্র এক মাস আগে
১৬ ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে
আয়োজিত রাষ্ট্রীয় সম্বর্ধনায় বেগম এরশাদকে দেখা গেছে। মাত্র দুই সপ্তাহ হবে ৪ জানুয়ারি যুবরাজ করিম আগা খানের সম্মানে
বঙ্গভবনে আয়োজিত ভোজসভাতেএ বেগম রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। কেউ তখনও বলেনি তিনি
সন্তানসম্ভবা। তাঁকে দেখেও তেমন কিছু মনে
হয়নি।...
তো, পরে এই ভদ্রমহিলা ফার্স্ট
লেডি থেকে লাস্ট লেডি হয়ে গেলেন। কমিশন তখন এরশাদের বিরুদ্ধে ৫৩৪টি এবং রওশন
এরশাদের বিরুদ্ধে ২১২টি মামলা করার জন্য সুনির্দিষ্ট অভিযোগ খুঁজে পায়। পরে ঠিক
কতগুলো মামলা রওশন এরশাদের বিরুদ্ধে হয়েছিল এর সঠিক তথ্য আমার কাছে নাই বা তিনি কয়টা মামলার
নিষ্পত্তি করেছেন।
কাম ব্যাক পিটার, কাম ব্যাক পলের
মত ঠিক-ঠিক তিনি আবারও লাস্ট লেডি থেকে সেকেন্ড লেডিতে রূপান্তরিত হয়েছেন। ফ্রানজ
কাফকার মেটামরফোসিসের মতই দানবীয় এ রূপান্তর!
No comments:
Post a Comment