১৯৯৪ সালে জাপানে ‘ফুকুওকা’ শহরে ‘Rickshaw
Painting-Traffic Art in Bangladesh’
একটি আর্ট শো হয়েছিল। তখন কিছু জাপানি প্রথম বাংলাদেশের নাম শুনেছিলেন এই রিকশা
পেইটিং-এর কল্যাণে। কয়েকজন জাপানির মধ্যে রিউনোসুকো আকুতাগাওয়া নামের অন্তত একজন
জাপানির কথা মনে পড়ছে যিনি এই রিকশা-আর্টের কল্যাণে এদেশের কথা শোনেন যেটা তিনি ঝলমলে
চোখ-মুখ করে এটা বলছিলেনও।
অবশ্য আমাদের দেশে অতি উচ্চ
মানের যে সমস্ত পেইটিং-এর মিডিয়াতে ফলাও করে আমার চল রয়েছে সেই সমস্ত পেইটিং-এর
যেসব ছবি আমরা মিডিয়ায় দেখি তার সামনে অধিকাংশ মানুষগুলো যে রকম মাছি-হাঁ মুখ করে
দাঁড়িয়ে থাকেন তারা একবারে ম্যাট্রিক পাশ করেছেন বটে কিন্তু পেইটিং সম্বন্ধে এদের
যে ধারণা তা আঁরি মাতিসের ‘লা বাতু’-এর সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।
দুঁদে চিত্রশিল্পী আঁরি মাতিস-এর তখন দুনিয়াজোড়া নাম। ১৯৬১ সালে নুঅর্কের মর্ডান আর্ট গ্যালারীতে এই শিল্পীর
শিল্পকর্ম ‘লা বাতু’ (দ্য বোট)-এর প্রদর্শনী
চলছিল।
কোন এক হাবামানব ছবিটা উল্টো করে টাঙিয়ে দিল। দেখা গেল একটা নৌকা ওল্টো করা, নৌকার ওপরে সাগর, নীচে আকাশ এবং মেঘ।
পৃথিবীর আনাচে-কানাচে থেকে তাবড় তাবড় সমালোচক এলেন। কেউ কাঁধ ঝাকালেন, কেউ-বা পা নাচালেন। ছবির বিভিন্ন দিক নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেন।
কোন এক হাবামানব ছবিটা উল্টো করে টাঙিয়ে দিল। দেখা গেল একটা নৌকা ওল্টো করা, নৌকার ওপরে সাগর, নীচে আকাশ এবং মেঘ।
পৃথিবীর আনাচে-কানাচে থেকে তাবড় তাবড় সমালোচক এলেন। কেউ কাঁধ ঝাকালেন, কেউ-বা পা নাচালেন। ছবির বিভিন্ন দিক নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেন।
পরে জানা গেল ছবিটা ভুলে
উল্টো করে রাখা ছিল। পরে অবশ্য এদের অনেকেই অস্বীকার করেছিলেন যে তারা ওখানে
যাননি, গেলে কী আর এমন ভুল তাদের চোখ এড়াতো? তা বটে!
আমাদের
দেশে একজন দেখেছিলাম গরুর দিকে এমন গরুরদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে- ভাগ্যিস, গরুটা জীবিত ছিল না নইলে ঠিক কেঁদে ফেলত।
যাই হোক, রিকশা নিয়ে দেশ-বিদেশে
আরও অনেক আয়োজন হয়েছে বিধায় জাপানের আর্ট শোর খবরটা পুরনো, তবে আমার কাছে এখন যেটা
গুরুত্বপূর্ণ খবর মনে হচ্ছে সেটা হচ্ছে রিকশার পেছনে আঁকাআঁকি নামের এই রিকশা
আর্টের আয়ু খুব একটা বেশি নেই- অনেকটা হারিয়ে যাওয়া চাদরঘেরা রিকশার মতো। কারণ ক্রমশ পায়ে-চালিত
রিকশাগুলোর জায়গায় স্থান করে নিচ্ছে ব্যাটারি-চালিত রিকশা। আধুনিক এই জিনিসের পিছনে লোকজন এই আঁকাআঁকি
করতে যাবে কোন দুঃখে। সর্বত্র আধুনিকতার ছোঁয়া যে...।
No comments:
Post a Comment