দাদাদের দাদা লিখলে অনেকে
আবার ‘নাগ’ করেন। তারা নাকি আমার এই ভঙ্গির মাঝে বিষ বাষ্পের আড়ালে আমার
হাসি-হাসি চাঁদমুখ দেখতে পান। ওরে, ‘ভ্রুল-ভ্রুল’! দাদাদের
দাদা বলার অন্য কারণ নেই ‘দাদাদের
দাদাগিরি’ থেকেই এর যোগ। দাদা-বড়ভাই
তো মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, বড়ভাইদেরকে আমরা যেমন সমীহ করি ইজ্জত দেই তেমনি দাদাদেরকেও। এতে কারো লাল-নীল হওয়ার কিছু নাই।
দোষ তো ওদের না, বাপু। দোষ
আমাদের। অন্যায় তো কিছু করছে না- ভারত তার নিজ শহরকে অক্ষত রাখার জন্য সামান্য
কিছু টাকা ধরিয়ে দেয় আর এদেশে আমরা রেললাইন বসিয়ে দেই। মাগনা তো না, টাকা
দিচ্ছে তো। এতে আমাদের দেশের হাজার-হাজার লোক
উচ্ছন্নে গেল নাকি কার বাপ-দাদার হাড়ের উপর দিয়ে
রেললাইন বসত সেটা বলা অশোভনীয়! রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নাম করে সুন্দরবন বিপন্ন
হলো তো কী হলো? সুন্দরবন তো আর ওদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে না। দাদা-বড়ভাইদের শহরে একটা
ফেনসিডিলের কারখানা নেই সমস্ত কারখানা আমাদের সীমান্ত ঘেঁষে কিন্তু আমাদের
সন্তানদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার জন্য তো নিয়ে আসি
আমরাই, নাকি? এমন যে কতশত উদাহরণ।
এখন বিয়েতে আর ‘হলুদ বাটো, মেন্দি বাটো’ বাজে না, বাজে হিন্দি চটুল গান। শিক্ষিত পরিবারের ছেলেপেলেরা সপরিবারে বিকট
শব্দে বাজায়, ‘শিলা কি জাওয়ানি’। এই পরিবারের একজন, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কাজ করেন এমন একজনকে বিমলানন্দে মাথা নাড়াতেও দেখেছি। এ সত্য, এটা
তো আর ওরা বলে দেয়নি বাছা, আমাদের গান না-বাজালে কিন্তু বিবাহ সিদ্ধ হবে না। তাহলে?
বড়দের কথা নাহয় বাদই দিলাম।
ছোট্ট-ছোট্ট বাচ্চারাও এখন হিন্দিতে বাতচিত করে, ‘ম্যায় জিয়ান হু, ম্যায় আচ্ছা হু’। হিন্দিতে ডাব করা ডোরেমনের ফল। ওরা কী মাধার দিব্যি দিয়েছিল যে
বাংলায় ডোরেমন ডাব করলে মিসাইল ছুড়ে সমস্ত কলাগাছ শুইয়ে দেবে? তা, বাকী ছিল খেলার কল্যাণে সংস্কৃতি। সে ষোলোকলাও
পূর্ণ!
সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপে এর নমুনা আমরা দেখেছি। ভাল কথা, এ আর রহমান অস্কার বাগিয়েছেন তাই আমরা
তাকে বগলে করে রাখব কিন্তু যেভাবে সুরের মূর্ছনায় আমরা মূর্ছা গেছি তাতে করে মনে
হচ্ছে আমাদের দেশের কোনো ‘গাতকদের’ জন্য আর কিছু রাখিনি। মিডিয়াও ফেনা তুলবে এ আর বিচিত্র কী! যেখানে
জাতীয় দুলাভাই শাহরুখ এলে আমাদের মন্ত্রী
বাহাদুর মাটিতে বসে হাঁ করে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
একটা কৌতুক বললে বিষয়টা
খোলাসা করতে সুবিধে হয়। এক 'মহিলা শেয়াল' ফাঁদে আটকা পড়ল। পাশ দিয়ে যাচ্ছিল...। থাক,
এটা বলে কাজ নেই। অশ্লীলতার ধোঁয়া তুলে আমার পালকে নিন্দার নতুন উপাধি আর যোগ করি না কারণ এমনিতেই আমার
বন্ধু সংখ্যা শূন্যের কোঠায় শেষে এটা
ঋণাত্মক হয়ে যাক এই নহে মোর প্রার্থনা...।
কেবল একটাই দাবী হিন্দি
ভাষাকে তার যথার্থ মর্যাদা দেওয়া হোক। আমাদের দেশে হিন্দি হোক দ্বিতীয় ভাষা। মানতে
হবে, মেনে নাও। কালো হাত ভেঙ্গে দাও।
No comments:
Post a Comment