এই বঙ্গদেশে আমরা কী বিশ্বাস করি সেটা জরুরি না, হাল ধরে আছেন যারা
তারা কী বিশ্বাস করেন সেটাই জরুরি।
এই যেমন আমি তিন ঘন্টা লোডশেডিং-এর পর এখন লিখতে বসেছি কারণ আমার
লেখালেখির যন্ত্রটা দুর্ধর্ষ, এক সেকেন্ড ব্যাপআপও নেই। অতএব বিদ্যুৎ না-আসা পর্যন্ত আমার
গতি নেই। নিয়ম করে প্রতিদিনই দু-তিন ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে আর কত বার বিদ্যুৎ
আসে-যায় এর হিসেব কে রাখে! কিন্তু বিশ্বাস করুন এই লোডশডিং-এর বিষয়টা আমি নিজেই
বিশ্বাস করি না। কারণ...।
পাগল, বিশ্বস করব কোন দুঃখে! প্রধানমন্ত্রীর
জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, “অতীত স্মরণ রাখার জন্য মাঝে-মাঝে কিছুটা লোডশেডিং হওয়া ভাল...এটাও
আল্লাহর এক ধরনের রহমত। লোডশেডিং না হলে সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে
উন্নতি হয়েছে তা মানুষ ভুলে যাবে।“ (আমাদের সময়, ৩০ এপ্রিল
২০১৪)
আমরা ভুলে যাব? তাই তো! খারাপ,
খুব খারাপ- এটা তো কোনও কাজের কাজ না। অবশ্য এটা সত্য আমরা বড়ো বিস্মৃতপরায়ণ জাতি-
‘গোল্ডফিশ জাতি’!
শুকরিয়া-শুকরিয়া। কত প্রকারেই না আমাদেরকে সহায়তা করা হয়। অঘা-মঘার ‘স্মৃতি বর্ধক’ টাইপের বোতল না-খেয়ে ‘অটেকমেটিক’ পদ্ধতি রাখা হয়েছে যাতে
করে ভুলে যাওয়ার কোনও যো নেই। আমরা এই কৃতজ্ঞতা কেমন করে প্রকাশ করব?
বিদ্যুৎ কোন ছার...। বিদ্যুৎ
ব্যবহার করারও কিছু কায়দা-কানুন আছে। কঠিন এক শর্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করার জন্য
বেঁচে থাকাটা। মৃত মানুষের বিদ্যুৎ কোন কাজের! মৃত মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে
লেখালেখি-হইচই করেছেন এমনটা অন্তত আমি শুনিনি।
এদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “দেশে কোনও গুম-হত্যা নেই...”। (আমাদের সময়, ২৮ এপ্রিল ২০১৪)
আলবত নেই, নেই-নেই-নেই। সাগর-রুনি বা ত্বকি এমন অসংখ্য মানুষ, এরা
নিজেরাই নিজেদেরকে গুম করে খুন করেছেন এটা না-বলে কোনও উপায় নেই।
মাত্র গতকাল একে একে যে ৬টা লাশ ভেসে উঠল এগুলোকেও গুম-খুনের
আলামত হিসাবে দেখাটা সমীচীন হবে না। কে বলতে পারে এরা নিজেরাই নিজেদের হাত পিঠমোড়া
করে বেঁধেছেন, পা বেঁধেছেন, নিজের পেট নিজেই চিরে দিয়েছেন; এতে পারে না এমনটা, বেশ
পারে। এই রঙ্গভরা দেশে সম্ভব, সবই সম্ভব...।
No comments:
Post a Comment