আজও লঞ্চ ডুবেছে ৩০০ যাত্রী নিয়ে। বেশ ক-বছর পূর্বেও ৩০০ যাত্রী নিয়ে
লঞ্চ ডুবে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে একটা লেখায় লিখেছিলাম [১]:
“...শুনলে ভয়ে গা কাঁপে আমাদের দেশে সত্যিকার অর্থে উদ্ধারকারি কোন্ও জাহাজ
নাই। 'রুস্তম' এবং 'হামজা' নামের যে ২টা উদ্ধারকারি জাহাজ আছে এই বুড়া হাবড়াদের দিন
শেষ। একটাকে
টেনে নিয়ে যেতে হয়, অন্যটাকে ঠেলে!
আরও কথা আছে, এদের মিলিত ক্ষমতা ১২০ মেট্রিক টন অথচ এখন যেসব জাহাজ চলাচল করে অধিকাংশই ১২০ মে. টনের উপরে।
সবচাইতে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, এই রুস্তম এবং হামজার উদ্ধার কাজে আসা যাওয়াসহ তেলের খরচ দিতে হয় ডুবন্ত জাহাজের মালিককে। ফল যা হওয়ার তাই হয়, কার দায় পড়েছে গুচ্ছের টাকা খরচ করে শস্তা লাশের জন্য জাহাজ পানি থেকে উঠাবার।...”
আরও কথা আছে, এদের মিলিত ক্ষমতা ১২০ মেট্রিক টন অথচ এখন যেসব জাহাজ চলাচল করে অধিকাংশই ১২০ মে. টনের উপরে।
সবচাইতে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, এই রুস্তম এবং হামজার উদ্ধার কাজে আসা যাওয়াসহ তেলের খরচ দিতে হয় ডুবন্ত জাহাজের মালিককে। ফল যা হওয়ার তাই হয়, কার দায় পড়েছে গুচ্ছের টাকা খরচ করে শস্তা লাশের জন্য জাহাজ পানি থেকে উঠাবার।...”
লাশ ভেসে গেলেই তো আমাদের সবারই সুবিধা। দায়দায়িত্ব, খরচ কমে আসবে।
এতে আমাদের কী আসে যায় যে ওই লাশগুলোর স্বজনেরা তাদের প্রিয়মানুষে লাশগুলোও পাবেন
না। যার যার ধর্মীয় বিধান মতে শেষ বিদায়ও দিতে পারবেন না- চাপা স্বরে এটাও বলতে পারবেন না, আহা, আস্তো
নামাও না হে দুক্কু পায় না বুঝি। শেষ স্পর্শ, মাটিতে গড়াগড়ি করে কেঁদে বুকটাও
হালকা করতে পারবেন না।
কী কাকতালীয়! ২০১৪ সালেও একই শিরোনাম ৩০০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ডুবে
গেছে।
ফি বছর নিয়ম করে এটা চলেই আসছে। এই নিয়ে কোনও সরকারেরই খুব একটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই পাশাপাশি আমাদেরও কারণ এই
সমস্ত লঞ্চে যারা যাতায়ত করেন এরা দেশের মাথাওয়ালা লোকজন না, কেবল একেকটা সংখ্যা
মাত্র! অবশ্য এলাকার রাজনীবিদদের দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারী হয় কারণ অনেকগুলো ভোট
পানিতে ডুবে গেল!
তখন অবশ্য আমরা এটা জেনে আমোদিত হয়েছিলাম সেই সময়কার সরকার মৃতের
পরিবারকে ছাগল প্রদানের (রশি ফ্রি) যে অভূতপূর্বে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তা কী এখনও
চালু আছে? থেকে থাকলে সঙ্গে একটা করে কাঠাল গাছের চারা দেওয়ারও জোর দাবী জানাই।
আশার কথা, ২০১৩ সালে ‘নির্ভীক’ ও ‘প্রত্যয়’ নামের জাহাজ, যে দুটির মিলিত ক্ষমতা ৫০০
মেট্রিক টন; ১৯৭৪ সালের পর এই
প্রথম উদ্ধারকারী জাহাজ হিসাবে যুক্ত হয়েছে। এই কারণে বর্তমান সরকার আন্তরিক
সাধুবাদ পেতে পারেন। যদিও দেশে চলাচল করে এমন প্রচুর আধুনিক নৌযান আছে যেগুলো ৫০০ মেট্রিক টনেরও উপরে।তবুও মন্দের ভাল। পিপাসার্ত আমাদের শূন্য গ্লাসের চারপাশে লেগে থাকা পানির ফোঁটাও কম কী। প্রয়োজনীয় উদ্যেগগুলো দ্রুত নেওয়া হবে, আশায় থাকি...।
১. http://www.ali-mahmed.com/2009/03/blog-post_15.html
No comments:
Post a Comment