'
চিংগুরাদেশ' নিয়ে পূর্বেও কিছু লেখা লিখেছিলাম কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে হাতের
নাগালে ম্যাপ, কম্পাস না-থাকায় দেশটা ঠিক কোথায় এর হদিস বের করতে পারিনি।
চিংগুরাদেশটা বড়ো বিচিত্র দেশ ততোধিক বিচিত্র ওই দেশের লোকজনের
কর্মকান্ড! আজকাল স্বয়ং ঈশ্বরও হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
দেশটার দায়িত্বশীল লোকজনেরা এটা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেন যে
দেশে গুম-হত্যা নেই কিন্তু দেখো দিকি কান্ড ওই দেশের লোকজনেরা এটা মানতেই চাচেছ না। এই নিয়ে
বেদম হইচই করেই যাচ্ছে। জীবিত তো জীবিত মৃত মানুষরাও এতে যোগ দিল। ডুবে গেলেই হয়!
না, এরা একে একে ভেসে উঠতে লাগল। কপাল!
গোয়েন্দা মাসুক নানা, কিরিটি, শার্লক হোমসের হকিকতনামা লিপিবদ্ধ করে
যেমন একেক দেশ মাতানো হয়েছে তেমনি চিংগুরাদেশের দুঁদে গোয়েন্দা ‘ব্রিগাঞ্জার’। তমিজ করে লোকজন তাকে বলে
মি. ব্রিগাঞ্জা। তিনি ‘এগোহাখা’ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। সবাই যেখানে হাল ছেড়ে দেয় সেখান থেকে তিনি
তার কাজ শুরু করেন।
একবার একটা ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ায় বিস্তর লোক মারা গেলে তিনি আঁক কষে বলে
দিলেন এই দুর্ঘটনাটা আসলে মিথ্যা কারণ বগিতে ‘৬৮ জন বসিবেক’ এভাবে হিসাব করে দেখলেন মৃতের সংখ্যা এরচেয়ে অনেক বেশি তাই তার মতে এই মামলা
ডিসমিস। আদৌ দুর্ঘটনাই ঘটেনি। লাশ দেখিয়ে সবাই মিলেও তাকে বোঝাতে পারলেন না যে এই দেশে
স্থানাভাবে অনেকে দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়েও ভ্রমণ করেন। যেদিন বোঝানো গেল সেদিন থেকে আরেক হ্যাপা।
প্লেন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার পর তিনি অনেক বছর ধরে কস্তাকস্তি করে গবেষণা করলেন যে প্লেনের
যাত্রীদের মধ্যে কারা কারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করছিলেন এই নিয়ে।
যাই হোক, এবারও তিনি কাজ শুরু করলেন তরস্বান চিন্তা নিয়ে। সহকারীর মুন্ডুতে
তলাভিঘাত করে বিড়বিড় করলেন, ‘ছিইপা- ছিইপা’! লাশগুলোকে ডোবাবার কাজে যে ইটগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল সেই ইট নিয়ে
পড়লেন। তিনি আতশ কাঁচ আগুপিছু করে অবশেষে এটা বের করতে সমর্থ হলেন ইটগুলোতে খোদাই
করা, ‘এমবিবি’। ইটগুলো ‘মামা-ভাগিনা ব্রান্ডের।
তিনি চোখের নিমিষিই রহস্যের কাছাকাছি চলে আসলেন। ঘোষণাটা দিয়েই
দিয়েছেন কেবল হাতেনাতে ধরাটাই বাকী। দেশে গুম-খুন নেই যেহেতু তাই এই পেট চিরে ভেসে
উঠার কর্মকান্ডের সঙ্গে মামা-ভাগিনা জড়িত। চিংগুরাদেশের যত মামা-ভাগিনা আছে সব্ই এখন
মি. ব্রিগাঞ্জার সন্দেহের তালিকায়। আশার কথা, তিনি তার জাল ক্রমশ গুটিয়ে আনছেন। দেশের তাবৎ মামা-ভাগিনার
মধ্যে থেকে আসল মামা-ভাগিনাকে ধরাটা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র...।
...
এ তো গেল ফিকশন এবার ফ্যাক্টস! বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র সরকারী সংস্থাগুলো, ততোধিক বিচিত্র আমাদের মিডিয়া। দৈনিক আমাদের সময়, ৪ মে ২০১৪ ।
...
এ তো গেল ফিকশন এবার ফ্যাক্টস! বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র সরকারী সংস্থাগুলো, ততোধিক বিচিত্র আমাদের মিডিয়া। দৈনিক আমাদের সময়, ৪ মে ২০১৪ ।
No comments:
Post a Comment