‘বে-নজির’, পূর্বের এই লেখায় লিখেছিলাম [১], স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় বলেছিলেন, “...দুনিয়ার কোথাও ছুটির দিনে চিকিৎসক পাওয়া যায় না, কেউ মরে গেলেও চিকিৎসক আসেন না। কিন্তু বাংলাদেশের হাসাতালে ছুটির দিনেও জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু থাকে।“
পৃথিবীর কিছু-কিছু
দেশ সম্বন্ধে জানি না এমন না যে ম্যাজিক নাম্বার মাত্র তিনটে সংখ্যা চাপলেই কেমন করে আলাদিনের চেরাগ এসে হাজির হয়।
তারপরও আমার আগ্রহ ছিল একটা দেশে বসবাস করেন এমন একজনের মুখ থেকে শোনা। মন্ত্রী
মহোদয় বলে কথা! এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এমনটা বলবেন এ অবিশ্বাস্য।
যাই হোক, বিলেত ওরফে
ইংল্যান্ড থেকে জানাচ্ছেন Fakruddin
Shahariar,
“...এখানে বছরে ৩৬৫ দিনই দিন
রাত ২৪ ঘন্টাই ইমির্জেন্সি সার্ভিস খোলা থাকে। যে কোন ইমার্জেন্সিতে শুধু কষ্ট করে আপনাকে ৯৯৯ নাম্বারে ডায়াল
করলেই হবে...এম্বুলেন্স,
পুলিশ বা ফায়ার সার্ভিস যেটা বা সবগুলোই দরকার মনে করলে আপনার ঠিকানায় ৫/১০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। খৃষ্টমাসের সময়
এদের যখন প্রায় সবকিছুই বন্ধ তখনও এই তিন
ইমার্জেন্সি সেবা খোলা থাকে।”
পূর্বের লেখাটায় (বে-নজির)
উদ্বোধনের একটা প্রসঙ্গ এসেছিল। আমাদের দেশের ব্রিজ-কালভার্ট-সেতু-রাস্তা-হাসপাতাল এমন কোনও পাতাল নেই যেটা মন্ত্রী বাহাদুর উদ্বোধন না-করলে চালু
হবে। আফ্রিকার এক অভিজ্ঞতা নিয়ে জানাচ্ছেন Sharifus Salekin
Shahan
:
“...I
was returning from Capetown and when in the airport we discovered that a few
minutes ago that brand new terminal was inaugurated . We got some very good
chocolates as gift. I asked the girl behind the Qatar Airways desk - so your
president was here to inagurate.”
যোগাযোগমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের মানুষ হিসাবে একজন সজ্জন ব্যক্তি। মানুষটা কথা কম, কাজে বিশ্বাসী কিন্তু
মন্ত্রী তো! গিয়েছিলেন ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সভায়। বললেন,
“...অনেকে সংসদ এবং সংসদের বাইরে পদ্মা সেতুর নাম বঙ্গমাতা বেগম
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবর নামে করার দাবি জানিয়ে আসছেন। এটা নিছক তাদের আবেগই নয়, যথেষ্ঠ যুক্তিও আছে। কারণ
এই মহীয়সী নারী আড়াল থেকে অনেক কিছুই করেছে যা এক নামেই শেষ করা হবে না।...“
অতি উত্তম। তারপর
বললেন, “...বিএনপি যত হুমকিই দিক...। এখন আষাঢ় মাস। এই জন্যই আমি বলি,
তাদের আষাঢ়ের তর্জন-গর্জনই সার।“
আষাঢ় মাস বেচারার দোষ কোথায়! তর্জন-গর্জন এরপর কী বৃষ্টি বর্জন
করে? কই, এমনটা তো জানি
না।
তিনি আসলে কী বলতে
চেয়েছেন তা বোঝা মুশকিল। কারণ মন্ত্রীরা তো ভুল করতে পারেন না নইলে বলতাম আমরা পড়ে
এসেছি, ‘অসারের তর্জন-গর্জনই সার’। এটা তো সবার জানা যার ইংরাজি হচ্ছে, “Barking
dogs seldom bite. বা Empty vessels sound much.”
এমনিতে আমাদের রথী মহারথী
মহোদয়গণ হেন কোনো বিষয় নেই যা জানেন না এমন কোনও প্রসঙ্গ নেই যেটা নিয়ে বলেন না! বনমন্ত্রী
বলেন যুদ্ধাপরাধের আইন নিয়ে তো আইনমন্ত্রী বলে বসেন শেয়ার বাজার নিয়ে - এই চলে
আসছে।
পূর্বের প্রসঙ্গে ফিরে যাই। ওমানের রাষ্ট্রদূত এখানে বললেন, “দিল মে কুছ কালা হ্যায়।“ পরে হাসি চেপে অতিথিরা ওটা সংশোধন করে দেন। এই ভিডিওটি যারা না-দেখেছেন
[২], এই ভদ্রলোকের বক্তৃতা যিনি না-শুনেছেন তিনি কল্পনাই করতে পারবেন না ভিনদেশে
আমাদের রাষ্ট্রদূতরা কেমন করে দেশকে আলোকিত করেন!
১. বে-নজির!: https://www.facebook.com/ali.mahmed1971/posts/10152202780782335
২. ওমানের রাষ্ট্রদূত: http://www.ali-mahmed.com/2011/08/blog-post_12.html
No comments:
Post a Comment