Search

Monday, August 11, 2014

অমানুষ এবং সভ্যতা!



ইরাকে #Islamic State (Is) -কে নিয়ে ইসলামপন্থী অনেকে উল্লসিত কারণ এরা নাকি ইসলামের ঝান্ডাধারী। আবার অনেকে খুবই আমোদিত এটা প্রমাণ করতে পেরে যে দেখো-দেখো, ইসলামপন্থী লোকজনেরা কী নৃশংস!

 

#IslamicState(Is) , এরা চরম নৃশংসতা দেখাচ্ছে তাতে করে অনেকে এদেরকে কসাই বলছেন। আমি তাদের সঙ্গে একমত নই কারণ কসাইগিরি একটা পেশা, বৈধ পেশা। কসাইদের মধ্যেও আমি প্রচুর লোকজন দেখেছি যারা অতি মানবিক, অন্য লোকজনের মতই। তাই আইএসদেরকে কসাই বলতে আমি নারাজ।

 

এদেরকে অমানুষ বলা যেতে পারে কারণ এদের মধ্যে মানবিক কোনও আচার-আচরণ বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই। অমানুষ তো অমানুষই এদের আবার কীসের জাত-পাত, ধর্ম!

এরা যে যুদ্ধ করছে এটাকে কোনও প্রকারেই যুদ্ধ বলা চলে না। এরা বেসামরিক লোকজনকে খুন করছে, স্রেফ খুন- ঠান্ডা মাথায় খুন। যাদেরকে খুন করা হচ্ছে এদের অধিকাংশই কোনও প্রকারেই যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত না।

এবং এরা খুন করে যেভাবে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিচ্ছে এতে এটাই স্পষ্ট হয় এটা করা হচ্ছে বিশেষ একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। এবং এতে যে লোভি বিশ্বমোড়লদের স্নেহের হাত নাই এটা অন্তত আমি বিশ্বাস করি না।   

 

আসল উদ্দেশ্য সহসাই জানার কোনও যো আমাদের নাই কারণ পশ্চিমা মিডিয়া আমাদেরকে কি গেলাতে চাচ্ছে সেটাই মূখ্য। আমরা গিলে বমি-টমি করার পর যদি কখনও সুস্থির হই তখন আসল বিষয়টা হয়তো আঁচ করা যাবে।

ছোট্ট একটা উদাহরণ দেই। নাইন ইলাভেন। টুইন টাওয়ার ধ্বংস হওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের ফুটেজ দেখাচ্ছিল সিএনএন-এ। একটি ফুটেজ দেখে বিশ্ববাসী হতভম্ব, ব্যথিত কারণ ওই ফুটেজটায় দেখা গেল ফিলিস্তানিরা আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস করছে। অর্থাৎ টুইন টাওয়ার ধসে যাওয়ায় ফিলিস্তানিরা বেজায় আনন্দিত। কিছুদিন পর সিএনএন খুই হেলাফেলা করে টেলপে লিখে জানায়, ফুটেজটি ছিল পুরনো এবং এটা ভুলবশত দেখানো হয়েছে। ব্যস, মামলা ডিসমিস।

 

তাই সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়- ইসারাইলি তিন কিশোরকে কি ফিলিস্তিনিরাই অপহরণ করেছিল নাকি ইসরাইল নিজেই এই কাজটা করে ফিলিস্তিনে ঝাঁপিয়ে পড়ার একটা সুযোগ করে নিয়েছে? নাকি ফিলিস্তিনি কিশোরকে ইসরাইলিরাই পুড়িয়ে মেরেছে না হামাস এটা করে বিশ্ববাসীকে বোকা বানিয়েছে? এই শঙ্কা একেবারেই অমূলক বলে অন্তত আমি উড়িয়ে দেই না। কারণ এদের কাছে মানবতা-ধর্ম এই সমস্ত জরুরি না। জরুরি হচ্ছে ক্ষমতা। ক্ষমতার জন্য হাজার-লাখ মারা গেল এতে এদের বয়েই গেছে।

 

যেমনটা আমরা আমাদের বিশ্ববাবা আমেরিকার কথা অনেক পরে জেনেছি। ইরাকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে কারণ ইরাকে গোপন অস্ত্রের পাহাড় লুকিয়ে আছে। শেষপর্যন্ত তন্নতন্ন করে খুঁজে পাওয়া গেল বুশের বিচি! তো, এরপর? আমেরিকার কী ঘন্টাটা হলো? ফাঁকে তো লক্ষ প্রাণ শেষ!

এটা জানার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তেল-অস্ত্র অসম্ভব লাভজনক। বিশেষ করে অস্ত্র। হাইটেক যেসমস্ত অস্ত্র বানানো হচ্ছে এগুলো বুকে লাগিয়ে রাখলে তো হবে না। বিক্রি করতে হবে। আগে ক্লাস্টার বোমায় ১০০জন মারা যেত এখন ৫০০জন মারা যায়। রিয়েলি? ফাঁকা মরুভূমিতে এই মহড়া দিলে তো হবে না। এর জন্য জীবিত মানুষ প্রয়োজন। কোথায় পাওয়া যাবে?

আহা, জাত-পাত, ধর্মের নামে একটা যুদ্ধ লাগাও। শয়ে শয়ে ক্লাস্টার বোমা পড়ছে শত-হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। শ্যাম্পেনের গ্লাস ঠুকে পরস্পরের স্বাস্হ্য পান করে চুমুক দাও। ওই যুদ্ধের ভিজ্যুয়াল দেখো। দরদস্তুর করে অস্ত্রের অর্ডার দাও। ডিল।

 

২০০৬, জুন। ১৯ বছরের একজন ইসরাইলি কর্পোরাল জিলাদ শলিতকে মুক্ত করার নাম করে ইসরাইল ফিলিস্তিনে অনুপ্রবেশ করে ফিলিস্তিনের ৯জন মন্ত্রী এবং ২০জন এমপিকে চোখ বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে তুলে নিয়ে যায়! এটাই হচ্ছে আমাদের সভ্যতার নমুনা! আসলে গুহামানবরা পূর্বে যেভাবে জীবন-যাপন করত- শক্তি প্রয়োগ করে অন্যের খাবার-নারী-বসত ছিনিয়ে নিত এখনও এ অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সভ্যতা ওখানেই থেমে আছে, ভঙ্গি বদলেছে মাত্র...। 

 

দুর্বলচিত্তের কারও এই ভিডিওটা না-দেখাই ভাল:


No comments: