সযতনে পরিহার।
পরীক্ষার ফল দেওয়ার পর পত্র-পত্রিকায় নিয়ম করে বেশ কিছু ছবি ছাপা
হয়। ছেলে-মেয়েদের উচ্ছ্বাসভরা ছবি। এদের
হাসিমুখের ছবি দেখতে ভালই লাগে।
কিন্তু পত্রিকাওয়ালাদের ছাপাবার নমুনা
বৈসাদৃশ্য লাগে। কাজটা অনেকেই করেন তবে এখন উদাহরণ হিসাবে প্রথম আলোকে বেছে নেওয়া
যাক। এই পত্রিকাটিকে বেছে নেওয়ার পেছনে কারণটা হচ্ছে প্রথম আলো আমাদেরকে অনেক কিছু শেখায়- লাইক দেওয়া ‘লাইকালাইকি’ শেখায়, শপথ করা
শেখায়, শেখায় কারও পিতৃপ্রদত্ত নাম ছেঁটে দেওয়া বা দেশ যখন রানা প্লাজার লাশের মিছিল নিয়ে স্তব্ধ তখন
নাচাগানা করে...।
এদের শপথে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকের জীবন পাল্টে
গেছে। এমনকি দুঁদে বুদ্ধিজীবীরাও মানুষ হয়ে গেছেন! শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান প্রথম আলোর শপথে দুরন্ত প্রভাবিত হয়ে
তার বাসার কাজের ছেলেকে ‘ল্যাকাপড়া’ শিখিয়েছেন [১]।
যাই হোক, দৈনিক #প্রথমআলো (১৪ আগস্ট
২০১৪) এসএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত ছেলেমেয়েদের আনন্দধারার ১৭টা ছবি ছাপিয়েছে। এরমধ্যে
১৫টা ছবি মেয়েদের। কেবল ২টা ছবি
ছেলেদের। ভাগ্যিস, ২টা ছবি
ছেলেদের দেওয়ায় চেপে রাখা শ্বাসটা ছাড়তে পারছি আমি নইলে একটা কুৎসিত ভজকট হয়ে যেত।
দুম করে এটাই ভেবে বসতাম দেশে ছেলেরা কেউ পরীক্ষাই দেয়নি। বলা যায় না এই কারণে হিতাহিত
জ্ঞান হারিয়ে আমি জুকারবার্গের নাকে গদাম করে একটা ঘুসিই মেরে বসতাম। রে পাপিষ্ট জুকারবার্গ, তোর কারণেই, তোর কারণেই
আমাগো ছেলেরা ফেসবুকে থেকে-থেকে এমন উচ্ছন্নে
গেছে যে এরা পরীক্ষাটাও পর্যন্ত দেয়নি।
যাক, ওই ২টা ছবির কল্যণে জুকারবার্গের খাড়া
নাক বেঁচে গেল। পুলিশের হাঙ্গামা থেকে বেঁচে গেলাম আমিও। নাকের জন্য বাচ্চু ভাই ওরফে মতি ভাইয়াকে জুকারবার্গ বেসুমার ‘ট্যাকাটুকা’ দিলেও আপাতত আমি শুষ্ক ধন্যবাদ দিয়েই কাজ চালিয়ে নেব বলে স্থির করেছি।
কেউ-একজন আমাকে বলেছিল এই দেশের অধিকাংশ
মাথওয়ালারা কোনও-না-কোনও প্রকারে প্রথম আলোর সঙ্গে জড়িত। সেদিন আমি ওই মানুষটার সঙ্গে একমত হতে পারিনি কিন্তু আজ আর আমার এতে কোনও সন্দেহ নেই। জয় হোক প্রথম আলোর!
লেখার পেছনের লেখা: এই লেখাটায় আমি #চুতিয়া
শব্দটা লিখতে গিয়ে সযতনে পরিহার করলাম। এর পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। কে বলতে
পারে একদা কেউ হয়তো জটিল আঁক কষে এটা বের করবে এখন পর্যন্ত আমি যে আট-দশটা লেখা লিখেছি তার মধ্যে
গোটা বিশেক চুতিয়া শব্দটা আছে। জেনেশুনে এই ঝুঁকিটা নেওয়া চলে না।
No comments:
Post a Comment