গোলাম
মাওলা রনি। একজন সংসদ সদস্য এবং লেখালেখিও করেন বটে। স্যারের একটি পরিচয় অন্য
পরিচয়কে ছাপিয়ে যায়। ‘মোগল হেরেমের দুনিয়া কাঁপানো প্রেম’ নামে রগরগে ধারাবাহিক একটা লেখা লিখছেন। তার এই সব লেখায় পু..দন্ড, অ..কোষ,
র..ক্রিয়ার যেসব বর্ণনা তার নাম না-থাকলে ধরে নিতাম রসময় গুপ্তের লেখা পড়ছি।
৩৪তম
পর্বে (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৩ আগস্ট, ২০১৪) প্রহরীরা ফক ফক করে হাসে। এই প্রহরীগুলোর
কথা বলতে দন্তহীন মাঢ়ির ফাঁক বা বিরল দাঁতের ফাঁক দিয়ে
হাওয়া বের হয় এমনটা কিন্তু না তবুও এরা ফক ফক করে হাসে! তা হাসুক, লেখকের
স্বাধীনতা বলে কথা!
প্রহরী
ফক ফক করে হাসতে পারলে সম্রাট কুত কুত করে হাসতে পারবেন না কেন! গোলাম মাওলা রনির
সম্রাট কুত কুত করে হাসেন।
এই
লেখার একস্থলে রনি লিখছেন:
“...সম্রাজ্ঞির
ঘোড়ায় চড়ার চেষ্টার উদ্দামতা যেন আরও বেড়ে গেল। তিনি সম্রাটের পিঠের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে নিজের দু’পা দিয়ে স্বামীর দু’পা সজোরে প্যাঁচ মারলেন।...শাহেনশাহের
সুড়সুড়ি আরও বহু গুণে বেড়ে গেল। তিনি ওরে বাবাগো, ওরে মা গো। এই নূরজাহান, ছাড়। দয়া করে ছাড়।
...তিনি
(সম্রাজ্ঞি) শাহানশাহের ঘাড়ে
সজোরে দংশন বসিয়ে দিলেন...উভয়ে
প্রায় ঘন্টাখানেকের প্রাণান্ত চেষ্টার পর সেই আটক অবস্থা থেকে মুক্ত হলেন বটে
কিন্তু ততক্ষণে শরীরের ঘামে উভয়ের কাপড় চোপড় ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।...”
ভাষার
যে কারুকাজ দেখছি আমি বাক্যহারা না-হয়ে ‘কলমহারা’ হয়ে যাচ্ছি।‘দংশন বসিয়ে দিলেন’! ওরে, পৃথিবীটাকে কেউ ধর আর সম্রাট যেখাবে বাবাগো মাগো বলে কাতর
হচ্ছিলেন... বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে লেখক মহোদয় অকুস্থলে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন।
লেখক মহোদয় ওখানে কেন গিয়েছিলেন এটা নিশ্চিত জানার উপায় নেই হয়তো গুলিস্থান থেকে
মান্ডার তেল নিয়ে গিয়েছিলেন। তাছাড়া সম্রাট-সম্রাজ্ঞির বিযুক্ত হতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগল। লেখক মহোদয়ের প্রায় না-লিখে আসলে উপায়
ছিল না কারণ তখন তো আর তার কাছে হালের আধুনিক নিখুঁত ঘড়ি ছিল না, ছিল সূর্য-ঘড়ি,
বালিঘড়ি।
যাই
হোক, ‘ঢাকার
পুলিশ কমিশনারের কাছে খোলা চিঠি’শিরোনামে আরেকটি লেখায় (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২২ আগস্ট ২০১৪) তিনি পরিতাপের
সঙ্গে লিখছেন, ধানমিন্ড লেকের ওয়াক ওয়ে এবং আশেপাশের জায়গায় এ দেশের তরুণ-তরুণীরা
যেসব অপকর্ম করে যেসব বাজে কথা বলে তা পৃথিবীর কোনো অসভ্য দেশের ছেলেমেয়েরা করে
কিনা সন্দেহ।
ঢাকার
পুলিশ কমিশনারের কাছে এই খোলা চিঠিটায় আমাদের আইনপ্রণেতা মহোদয় সমাপ্তি টানছেন এটা
লিখে:
“...জনাব আমি যদি আপনার চেয়ারের মালিক হতাম...তাদের প্রতি কড়া
নির্দেশ থাকত আপত্তিকর অবস্থায় যাদের পাওয়া যাবে বা অসময়ে যারা স্কুল কলেজ ফাঁকি
দিয়ে ওই এলাকায় ঘুরতে এসেছে তাদের সবইকে ধরে নিয়ে আসো। ছেলেমেয়ে উভয়কেই প্রথমে বেত
মারো। আপত্তিকর
কর্মে জড়িতদের একশত বেত এবং বাকিদের
৫০ বেত। তারপর তাদের পিতা-মাতা ও স্কুল-কলেজের নাম-ঠিকানা নাও। এদের কাছে জিজ্ঞেস
কর বাবা-মা শিক্ষকরা ভাল না মন্দ। যদি ওরা মন্দ বলে তবে ওইসব বাবা-মা ও শিক্ষকদের
ধরে নিয়ে আসো। মুখোমুখি করো কুলাঙ্গারদের। যদি মনে হয় ছেলেমেয়েরা সত্য বলছে , তবে বাবা-মা শিক্ষকদের
পাছায় বেদম প্রহার করো। ...
মাননীয় কমিশনার সাহেব আপনি যদি উপরোক্ত কাজ করতে পারেন তবে আপনার স্থান হবে খলিফা
হযরত ওমর (রা.) বা খলিফা খলিফা হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজের (রহ.) পাশে।...“
No comments:
Post a Comment