১৯৭১ সাল। পাকিস্তানি আর্মি যখন এই দেশের লোকজনকে মেরে সাফ করে দিচ্ছে তখন বহির্দেশে এই সম্বন্ধে তেমন-কেউ বিশেষ কিছুই জানে না। সামরিক জান্তা জানার কোনও উপায়ই রাখেনি! ঠিক তখনই একজন মানুষ এগিয়ে এলেন। অ্যান্টনি মানকারেনহাস।
এই মানুষটা সম্বন্ধে আমরা প্রখ্যাত সাহিত্যিক শওকত ওসমানের কাছ থেকে শুনি। শওকত ওসমান তখন নিয়মিত দিনলিপি লিখতেন। তাঁর সঙ্গে মাসকারেনহাসের সশরীরে দেখা হওয়ার পর তিনি ২৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালের দিনলিপিতে লিখেছিলেন: “...বারো দিন ছিলেন টনি সাহেব একদা পূর্ব পাকিস্তানে। সামরিক কর্তৃপক্ষের অতিথি। ফলে ওদের কার্যকলাপ, মানসিক গতিবিধি অনেক কিছু নিরীক্ষণের সুযোগ পান তিনি। ...টনি মাসকারেনহাস করাচি ফিরে এলেন। সেদিন রাতে ডিনার খাওয়ার পর ছেলেমেয়ে, স্ত্রীদের নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে বসলেন। কখন ভোর হয়ে গেছে কারও খেয়াল নেই। সাংবাদিক নিজের চোখে অসহায় নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু দেখেছেন। বাইরের জগৎকে এ কথা জানাতে না পারলে তাঁর মনে আর শান্তি নেই।
...কিন্তু সব সময় বিবেকের আদেশ পালন করা যায়? ...টনি মাসকারেহাসের সমস্যা কম নয়। প্রথমত বাইরের জগতে এই কাহিনি পাঠানোর উপায় তো নেই। দ্বিতীয়ত, তিনি বিদেশে গিয়ে এসব ফাঁস করতে পারেন। কিন্তু তা অত সহজ নয়। আরও সমস্যা স্ত্রী-পুত্র নিয়ে যদি একদম করাচি ছেড়ে চলে যেতে পারেন, তখন সব সহজ হয়ে আসে। কিন্তু আটচল্লিশ বছর বয়সে দুই লাখ টাকা দামের বাড়ি ফেলে একদম অন্ধকারে ঝাঁপ দেওয়া কি অত সহজ?
...স্বাস্থ্যের অজুহাতে মাসকারেনহাসের পরিবার একদিন ইংল্যান্ড অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গেল। পেছনে পড়ে রইলেন গৃহকর্তা। পাছে কেউ সন্দেহ করে, তাই ঘরের একটা জিনিসও গৃহিণী এদিক-ওদিক বেচাকেনার পাল্লায় ফেলেননি। (দুই লাখ টাকা দামের) গোটা বাড়ি তো পড়ে রইলই।
...একদিন তিনিও ইংল্যান্ড পৌঁছালেন। পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে তিনি বোমা ছুঁড়লেন...।”
এর পর তো ইতিহাস। ১৩ জুন সানডে টাইমসে অসম্ভব গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হলো, ‘Genocide-জেনোসাইড’। যেন একটা আগ্নেয়গিরির মুখ খুলে গেল। সমস্ত বিশ্বকে ঝাঁকিয়ে দিল, কাঁপিয়ে দিল। এরপর একের-পর-এক অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবেদন ছাপা হতে লাগল টামস, নিউজউইক এবং বিশ্বের বিভিন্ন অতি প্রভাবশালী পত্রিকায়।
পরবর্তীতে এই অ্যান্টনি মাসকারেনহাস অসাধারণ এক বই লিখেছিলেন, ‘Bangladesh A Legacy of Blood. যে বইটির ভূমিকায় তিনি লিখেছিলেন, “This is a true story;
…It is based on my close personal knowledge of the main protagonists; on more than 120 separate interviews with the men and women involved in the dramatic events; and on official archives and documents which I had the privilege to inspect personally.
…I make no apology for it. The people must know the truth about their leaders; and may we all take lesson from their mistakes.”
এই মানুষটা সম্বন্ধে আমরা প্রখ্যাত সাহিত্যিক শওকত ওসমানের কাছ থেকে শুনি। শওকত ওসমান তখন নিয়মিত দিনলিপি লিখতেন। তাঁর সঙ্গে মাসকারেনহাসের সশরীরে দেখা হওয়ার পর তিনি ২৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালের দিনলিপিতে লিখেছিলেন: “...বারো দিন ছিলেন টনি সাহেব একদা পূর্ব পাকিস্তানে। সামরিক কর্তৃপক্ষের অতিথি। ফলে ওদের কার্যকলাপ, মানসিক গতিবিধি অনেক কিছু নিরীক্ষণের সুযোগ পান তিনি। ...টনি মাসকারেনহাস করাচি ফিরে এলেন। সেদিন রাতে ডিনার খাওয়ার পর ছেলেমেয়ে, স্ত্রীদের নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে বসলেন। কখন ভোর হয়ে গেছে কারও খেয়াল নেই। সাংবাদিক নিজের চোখে অসহায় নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু দেখেছেন। বাইরের জগৎকে এ কথা জানাতে না পারলে তাঁর মনে আর শান্তি নেই।
...কিন্তু সব সময় বিবেকের আদেশ পালন করা যায়? ...টনি মাসকারেহাসের সমস্যা কম নয়। প্রথমত বাইরের জগতে এই কাহিনি পাঠানোর উপায় তো নেই। দ্বিতীয়ত, তিনি বিদেশে গিয়ে এসব ফাঁস করতে পারেন। কিন্তু তা অত সহজ নয়। আরও সমস্যা স্ত্রী-পুত্র নিয়ে যদি একদম করাচি ছেড়ে চলে যেতে পারেন, তখন সব সহজ হয়ে আসে। কিন্তু আটচল্লিশ বছর বয়সে দুই লাখ টাকা দামের বাড়ি ফেলে একদম অন্ধকারে ঝাঁপ দেওয়া কি অত সহজ?
...স্বাস্থ্যের অজুহাতে মাসকারেনহাসের পরিবার একদিন ইংল্যান্ড অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গেল। পেছনে পড়ে রইলেন গৃহকর্তা। পাছে কেউ সন্দেহ করে, তাই ঘরের একটা জিনিসও গৃহিণী এদিক-ওদিক বেচাকেনার পাল্লায় ফেলেননি। (দুই লাখ টাকা দামের) গোটা বাড়ি তো পড়ে রইলই।
...একদিন তিনিও ইংল্যান্ড পৌঁছালেন। পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে তিনি বোমা ছুঁড়লেন...।”
এর পর তো ইতিহাস। ১৩ জুন সানডে টাইমসে অসম্ভব গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হলো, ‘Genocide-জেনোসাইড’। যেন একটা আগ্নেয়গিরির মুখ খুলে গেল। সমস্ত বিশ্বকে ঝাঁকিয়ে দিল, কাঁপিয়ে দিল। এরপর একের-পর-এক অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবেদন ছাপা হতে লাগল টামস, নিউজউইক এবং বিশ্বের বিভিন্ন অতি প্রভাবশালী পত্রিকায়।
পরবর্তীতে এই অ্যান্টনি মাসকারেনহাস অসাধারণ এক বই লিখেছিলেন, ‘Bangladesh A Legacy of Blood. যে বইটির ভূমিকায় তিনি লিখেছিলেন, “This is a true story;
…It is based on my close personal knowledge of the main protagonists; on more than 120 separate interviews with the men and women involved in the dramatic events; and on official archives and documents which I had the privilege to inspect personally.
…I make no apology for it. The people must know the truth about their leaders; and may we all take lesson from their mistakes.”
No comments:
Post a Comment