Search

Sunday, October 26, 2014

পারিজাত!

রিমাকে নিয়ে যে লেখাটা লিখেছিলাম [১] ওখানে এটা উল্লেখ করা হয়নি পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে কেবল এর পক্ষে হাঁটাই যে অসম্ভব এটুকুই না, এর বুদ্ধির বিকাশও হয়নি! যাদেরকে আমার ভাষায় বলি, ‘ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান, ভালবাসার সন্তান’।

এই মেয়েটির জন্য দুইজন সহৃদয় মানুষ মমতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। এঁদেরকে বিস্তর অনুরোধ করেও নাম লেখার অনুমতি পাওয়া গেল না। এই মানুষদের প্রতি কেমন করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হয় আমি জানি না, জানা থাকলে ভাল হতো।
যাই হোক, এই দুজন মানুষের অপার মমতার কারণে রিমার জন্য এখানে-ওখানে যাওয়ার এক স্বাধীনতা চলে এলো। আধুনিক মানুষরা যার নাম দিয়েছে, হুইলচেয়ার। এঁদের কল্যাণে কেবল যে একটা চকচকে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থাই হলো না, এই টাকায় রিমার জন্য দিব্যি হয়ে যায় কাপড়, খেলনা, রঙ করার পেন্সিল হাবিজাবি এটা-সেটা।
বারবার আমি যেটা বলি, আমি চোখে যে দৃশ্যগুলো দেখি এটা অন্যদেরকে দেখাই কেমন করে? এই দূর্লভ মুহূর্ত দেখাতে যে বড়ো সাধ জাগে। কিন্তু আহা, সেটা অতি সামান্যতমও ধরে রাখার ক্ষমতা ক্যামেরা নামের যন্ত্রের কোথায়?
রিমা নামের মেয়েটিকে হুইলচেয়ারে তার মা বসিয়ে দেওয়ার পর মনে হলো আমি যেন দেখছি পারিজাত-স্বর্গের একটা ফুলকে! তার কথা না-বলতে পারার ক্ষমতা যেটা পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে তার হাসি দিয়ে। তার এই উচ্ছ্বাস, অতল আনন্দ কোন নিতল থেকে উঠে আসে কে জানে...!

১. মমতার দাবী...: http://www.ali-mahmed.com/2014/10/blog-post_22.html 

Friday, October 24, 2014

রক্তের দাগ শুকিয়ে যায়, মুছে যায় না।

গতকাল গোলাম আযমের মৃত্যু হয়েছে। অনেকের মধ্যে এক ধরনের হাহাকার কাজ করেছিল, কেন তার মৃত্যুদন্ড হয়নি। আদালত বয়সের কারণে তাকে মৃত্যুদন্ড না-দিয়ে ৯০ বছরের কারাদন্ড দেন। এই রায় নিয়ে আমার নিজেরও অমত আছে। যদি এমন হত তার কৃত অপরাধগুলো মৃত্যুদন্ড পাওয়ার উপযুক্ত না তাহলে বিষয়টা ভিন্ন ছিল। কিন্তু এখানে তার বয়সটা বিবেচ্য হয়েছে। এমনিতে আমাদের দেশে একজন বয়স্ক মানুষ মৃত্যুদন্ড পাওয়ার মত জঘণ্য অপরাধ করলেও তিনি কী পার পেয়ে যাবেন? এটাই যদি আইনের কথা হয় তাহলে তো আর কথা চলে না।

গোলাম আযম অপরাধী হিসাবে দন্ডিত হওয়ার পর ১১০০ দিন কারাগারের পরিবর্তে হাসপাতালে কাটিয়েছেন। তিনি এমন কী অসুখে ভুগছিলেন যে তাকে ১১০০ দিনই হাসপাতালে রাখতে হলো? অন্য কয়েদির বেলায়ও কী এমনটাই ঘটে বা ঘটবে? উত্তরটা না-হয়ে থাকলে এখানে আইনের প্রয়োগে তারতম্য হয়েছে এমনটাই প্রতীয়মান হয়। এও এক ধরনের অন্যায়। আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা! এমন ব্যবস্থা একটা জাতির জন্য বাজে একটা উদাহরণ হিসাবে রয়ে গেল। 

অবশ্য গোলাম আযম মৃত্যুবরণ করেছেন একজন অপরাধী হিসাবে এটাও কিন্তু কম না। আমি যেটা বারবার বলি, রক্তের দাগ মুছে ফেলা যায় না। এটাও একটা স্বস্তির কারণ মৃত্যুর পূর্বেই গোলাম আজম নিরপরাধ রূপে পার পেয়ে যাননি। এটাও কিন্তু কম পাওয়া না। আমি এটাকে একটা বিজয় হিসাবেই দেখি।

আজ ২০১৪ সালে এসে যেটা অতি সহজ মনে হয়, পূর্বে এতোটা সহজ কিন্তু ছিল না। ২০০৫-৬ সালের কথা বলি। তখন আমরা যারা ওয়েব সাইটে লেখালেখি করতাম তাদের কাছে বিষয়টা অতি দুরূহ ছিল। এক সময় তো দেখতে দেখতে কৃষিমন্ত্রী পরে শিল্পমন্ত্রী মতিউর নিজামীর গাড়িতে পতপত করে উড়তে শুরু করে আমাদের জাতীয় পতাকা! এদিকে তখন ওয়েবে এই সংক্রান্ত তেমন কোনও তথ্যই নেই। বিশেষ করে বাংলায়। হাতের নাগালে উল্লেখযোগ্য বই-পুস্তকও নেই। যাও আছে আগুনদাম, থাকলেও এর-ওর কাছে ছাড়া-ছাড়া ভাবে। যার কাছে যেটা আছে সেটা নিয়েই অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে লেখা শুরু করলেন।

তখন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের দলিল আমার মত সাধারণ মানুষদের কাছে সহজলভ্য ছিল না। একটা লাইব্রেরিতে পাওয়া গেল জরাজীর্ণ অবস্থায়, পাতাগুলো ঝুরঝুরে! আমার মনে আছে, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের দলিল তখন ১৫০০০ হাজার পৃষ্ঠা ফটোকপি করেছিলাম। যেটা আমার কাছে এখনও আছে। তো, শুরু হলো ওখান থেকে এবং বিভিন্ন পেপার কাটিং স্ক্যান করে কপি-পেস্ট। লেখার-পর-লেখা।

সবাই যখন ঘুমুতে যায় আমি তখন বগলে করে একগাদা ফটোকপি নিয়ে আমার অফিসের কম্পিউটারের সামনে বসি। আহ, আমার সেই ‘জুতাখাওয়া’ কম্পিউটার (সেই কম্পিউটারকে কতবার চটি দিয়ে পিটিয়েছি তার ইয়াত্তা নাই, তবুও লাভ হয়নি!)! অথচ তখন লেখালেখির জন্য ৩৮৬ মেশিনকে ৪৮৬ মেশিনে আপগ্রেড করেছি কারণ ৩৮৬ মেশিনটা কেমন দুর্ধর্ষ ছিল খানিকটা বলি, ওটার হার্ড ডিস্ক ছিল ১০০ মেগাবাইটের! তাছাড়া ইন্টারনেট কানেকশনও অফিসে। টিএনটির ডায়াল-আপ লাইন। ধীর গতি কাহাকে বলে কত প্রকার ও কি কি! কখনও কম্পিউটার ঘুমিয়ে পড়ে কখনও-বা আমি।

কখন যে ভোর হয় তার হিসাব কে রাখে! কালে কালে হয়ে গেলাম ‘নিশাচর ড্রাকুলা’। প্রায়শ আমার মা ক্ষেপে গিয়ে বলতেন, ‘তুই আমার বাড়ি থিক্যা বাইর হ’। ভদ্রমহিলার হাজবেন্ডের বাড়ি বের করে দিলে তাঁকে খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। তাই আমি সুবোধ বালকের মত মাথা নেড়ে বলতাম, আচ্ছা, আর রাত হবে না। কীসের কী, তিনি ঘুমিয়ে পড়ামাত্র আমি যথারীতি যেই কে সেই! ‘নিশাচর ড্রাকুলা’!

সেই সময় খুব চালু একটা প্রতিরোধ ছিল। গোলাম আজমকে যে আপনারা অপরাধী বলছেন প্রমাণ কি, কেউ কি দেখেছে? তখন ২০০৬ সালে আমার অনেক লেখার একটা ছিল, ‘গোলাম আযমের চোখে, মুক্তিযুদ্ধ’ [১]
সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল গোলাম আযম ১৯৭১ সালে বলেছিলেন, “...বাংলাদেশ নামের কিছু হলে আমি আত্মহত্যা করবো...”
নিয়তির এ এক চরম পরিহাস, সেই গোলাম আযমকে মৃত্যুবরণ করতে হলো বংলাদেশে! এবং তিনি কখনই তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করেননি বা এই দেশের কাছে ক্ষমা চাননি। তাতে কিছুই যায় আসে না। রক্তের দাগ শুকিয়ে যায় কিন্তু মুছে যায় না। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন এটা সত্য কিন্তু তিনি যে একজন অপরাধী ছিলেন এটা রাবার দিয়ে ঘসে মুছে ফেলা যাবে না।

১. http://www.ali-mahmed.com/2007/06/blog-post_29.html

Thursday, October 23, 2014

নিছক দুর্ঘটনা।

এতটা কাল আমরা জেনে এসেছি লিমন এক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী! অনেকটা এমনই মনে হয়েছিল তখন, প্রশাসনযন্ত্র, দেশের সমস্ত অস্ত্র লিমনের দিকে তাক করা। এমন একজন শক্তিশালী মানুষকে সমীহ না-করার কোনও কারণ দেখি না। তাই আমি এক লেখায় লিখেছিলাম, ‘কদমবুসি করার জন্য লিমনের এক পা-ই যথেষ্ঠ' [১]!

সম্প্রতি মাননীয় আদালত সব ধরনের অভিযোগ থেকে লিমনকে অব্যহতি দেন। আজ পত্রিকায় পড়ছি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, “সাড়ে তিন বছর আগে লিমনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষযটি ছিল ‘নিছক দুর্ঘটনা’। ...একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে ধরতে গিয়ে এই অ্যাক্সিডেন্টটি হয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গুলিটি লিমনের পায়ে লেগে যায়। এটা একটা নিছক দুর্ঘটনা”। (বিডিনিউজ এর বরাত দিয়ে এটা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৩ অক্টোবর, ২০১৪)

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই যে তিনি স্বীকার করেছেন লিমনের পায়ে যে র‌্যাব সদস্যরা গুলি করেছিল এটা একটা নিছক দুর্ঘটনা। অবশ্য আমরা এই কুতর্কে যাব না যে মাননীয় আদালত লিমনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর লিমনকে এখন আর সন্ত্রাসী বলার উপায় নেই। বললে সেটা আদালত অবমাননার আওতায় পড়ে।
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদালতের মান রেখেছেন বলে তিনি একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন। ধন্যবাদপর্ব শেষ হলে আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সবিনয়ে জনতে চাই, বেশ-বেশ, এটা একটা নিছক দুর্ঘটনা ছিল আমরা না-হয় আপনার সঙ্গে একমত হলুম। তবে...? সেটা হচ্ছে, কেউ কার্ও এক পা উড়িয়ে দিয়ে আহা, এটা তো দুর্ঘটনা বলে পার পেয়ে যায় তাহলে তো কথাই নেই। কেউ দুর্ঘটনাক্রমে কাউকে গাড়ি চাপা দিল বা ছাদ থেকে দুর্ঘটনাক্রমে নির্মাণসামগ্রী ফেলে কাউকে নীচ থেকে উপরে পাঠিয়ে দিল ব্যস, এটা নিছক দুর্ঘটনা বলে ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য দুর্ঘটনা ফ্রন্ট’।

তারপরও একটা কিন্তু, একটা কিন্তু রয়ে যায়! ভুলক্রমে গুলি করে লিটনের পা উড়িয়ে দেওয়ার পর র‌্যাব বুঝতে পারল এটা একটা নিছক দুর্ঘটনা কিন্তু এরপর যে র‌্যাব লিটনকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে লিটনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে একটি অস্ত্র আইনে এবং অন্যটি সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার জন্য। সাড়ে তিন বছর ধরে মামলা চলার পর আদালত গত বছর ২৯ জুলাই লিমনকে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলা থেকে অব্যহতি দেন এবং এ বছর (২০১৪) ১৬ অক্টোবর সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার জন্য দায়েরকৃত মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। এই যে দু-দুটি মামলা করেছিল র‌্যাব, সেটাও কী নিছক দুর্ঘটনা?

১. কদমবুসি করার জন্য লিমনের এক পা-ই যথেষ্ঠ : http://www.ali-mahmed.com/2011/05/blog-post_22.html

Wednesday, October 22, 2014

মমতার দাবী, বড় জোর দাবী!

রাধানগর স্কুলের হেড-টিচার জাকির হোসেন যখন বললেন, ‘একটা হুইল-চেয়ার যে দেওয়া লাগে’, তখন বিরক্তিতে মনটা ছেয়ে গেল। কারণ বলার পরও এরা বুঝতে চান না যে হুইল চেয়ারের কারখানা আমার কাছে নাই। কিছু সদাশয় মানুষ আমার অশক্ত হাত শক্ত করে মমতায় ধরেন, নইলে আমি কোত্থেকে দেব!

এই মানুষটার কাছে স্কুল বিষয়ে আমি কৃতজ্ঞ বিধায় মুখের উপর না বলতে সংকোচ হয়। নিরুপায় আমি, আজ-কাল করে জাকির হোসেন নামের মানুষটাকে লাটিমের মত ঘুরাই। মনে মনে বলি, আরে, এই লোক হলো মাস্টার মানুষ, কেউ একজন বলল এইটা দরকার আর তিনিও মুক্তকচ্ছ হয়ে ছুট লাগালেন। কিন্তু সদা হাস্যময় মাস্টার মানুষটা যে কচ্ছপমানব এটা আমার জানা ছিল না। তিনি ঠিকই কামড় দিয়ে পড়ে রইলেন।

আজ মানুষটার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে করতে রওয়ানা হলাম। হা ইশ্বর! আমার এই অহেতুক বিলম্বের জন্য কার কাছে ক্ষমা চাইব? হুড়মুড় করে পড়ে যাবে এমন একটা বাড়ির সামনে দরোজায় পা ঝুলিয়ে রিমা মেয়েটিকে দেখলাম।
এর বয়স আনুমানিক ১০ বছর হবে কিন্তু ভারী শরীরের কারণে এর মা-বাবার পক্ষে একে এখানে-ওখানে বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। ওর মার কাছে শুনেছি ঘুম ব্যতীত সময়টুকু ওর সমস্ত ভুবনটা এই দরোজার চৌকাঠ পর্যন্ত। মেয়েটকে যখন দেখি গায়ে এর বোতামবিহীন একটা অতি জীর্ণ শার্ট সম্ভবত এটা ওর বাবার, যেটা ওর হাঁটু পর্যন্ত। পরে অবশ্য এর মা ভারী লজ্জিত হয় নিজের একটা ওড়না টাইপের কিছু একটা দিয়ে একে ঢেকে দিয়েছিলেন।
হাবিজাবি কাজ, অকাজে আমার অভিজ্ঞতার শেষ নেই কিন্তু আজ যে ঘটনার সম্মুখীন হলাম এ অভূতপূর্ব- আমার সঙ্গে আগে কখনও এমনটা ঘটেনি! চলে আসার সময় আমি রিমার মাকে বললাম, ‘আচ্ছা, আমি দেখি চেষ্টা করে এর জন্য একটা হুইল-চেয়ারের ব্যবস্থা করা যায় কিনা। তিনি যে উত্তর দিলেন আমি এর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। তিনি তোতাপাখির মত অনর্গল বকে গেলেন, ‘না-না-না, আমি অনেক আশা নিয়া বইসা আছি। আপনে একটা ব্যবস্তা কইরা দিবেন-দিবেন-দিবেন। দিতেই হইব’।

এমন পর্যায়ে আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে এমন কঠিন দাবী নিয়ে এতো জোর দিয়ে বলেনি। কী তীব্র দাবী- কী স্থির বিশ্বাস! হায়, হায় বোকা মহিলা, এ কেমন করে জানবে যে মানুষটার কাছে তাঁর এমন মমতার দাবী সেই মনুষটার ক্ষমতার দৌড় যে বড়ো সীমিত...।

Tuesday, October 21, 2014

“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি”!

গতকাল দিনটা শুরু হয়েছিল বড় বাজে রকমের। সকাল-সকাল এক অন্য রকম অতিথি! তাও সুস্থ-সবল হলে একটা কথা ছিল, অসুস্থ-আহত। অতিথি নারায়ন কিন্তু আমি এই অতিথিকে নিয়ে বিরক্ত, চরম ত্যক্ত-বিরক্ত।

ছোট্ট এই জায়গাটায় প্রায় দুই লক্ষ মানুষের বাস। সবাইকে ছেড়ে আমার এখানে কেন, বাপু। হোয়াই? তোমার শরীরটা ভাল নেই ঠিক আছে, কোনও জায়গা না-পেলে তা গাছে বসে থাকতে সমস্যা ছিল কোথায়? আক্ষরিক অর্থেই বিরক্ত লাগছিল কারণ আমার অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর না। এমতাবস্থায় এদের প্রায় সবারই মৃত্যু হয়েছে। ফাঁকতালে আমার মত অমানুষের ভুবনটা এলোমেলো করে দিয়ে গেছে!
ভাগ্যিস, এদের পরিবার-পরিজন বদ টাইপের না নইলে আমার বিরুদ্ধে মিছে মামলা ঠুকে দিলে বাঁচার কোনও উপায় ছিল না।

আমি লক্ষ করলাম পাখিটা পাখা ছেড়ে দিয়েছে- এমনিতে আমি পাখি চিনি না (আসলে মনে রাখতে পারি না)। শালিক, গো-শালিক, দোয়েল সবই আমার কাছে একই মনে হয়। তবে এটুকু বুঝতে পারছি পাখিটার লক্ষণ খারাপ! এর বাঁচার সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ। এর ঠোঁট, পায়ের নাগালে যা যা প্রয়োজন রেখে আপাতত খাঁচায় রেখে দেওয়া ব্যতীত উপায় ছিল না।
আমার কিছু ডাক্তার বন্ধু আছেন এদের কি ফোন করব? একবার এক ডাক্তারকে আহত কুকুরের চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছিলাম তিনি চোখ লাল করে বলেছিলেন, আমি কী কুত্তার ডাক্তার! থাক বাবা, ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। পরে এরা হেন ডিজঅর্ডার, তেন ডিজঅর্ডার নাম দিয়ে আমার চিকিৎসা শুরু করে দেবেন। এমনিতেই যথেষ্ঠ কুখ্যাতি অর্জন করেছি। আমি আতংকিত, একদিন সত্যি সত্যি লোকজনেরা আমার বাড়ি অভিমুখে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে বলাবলি শুরু করবে: চল, পাগল দেইখ্যা আসি।

সন্ধ্যায় যখন খাঁচার ভেতর পিঁপড়ার আনাগোনা বেড়ে গেল তখন প্রায় নিশ্চিত হওয়া গেল এর মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। ক্রমশ এর গা পিঁপড়ায় ভরে যেতে লাগল। পিঁপড়া নিয়ে আমার কষ্টের স্মৃতি আছে। আমার মাকে যখন শুইয়ে দেই তাঁর সফেদ-সাদা কাপড়ে ঢাউস এক পিঁপড়া দেখে এক ঝটকায় ওটাকে ফেলে দিয়েছিলাম। মার সমস্ত শরীর এখানে-ওখানে যে গেরোগুলো দেওয়া ছিল তা একেক করে খুলে দিতে হয়। নিয়ম। এর অর্থ আমি জানতাম। যেন অতি দ্রুত পোকায় শরীরটাকে খেয়ে ফেলে। 

যাই হোক, পিঁপড়ারা বুঝে গেছে পাখিটার আর প্রতিরোধ ক্ষমতা নাই। কিন্তু পিঁপড়ারা সম্ভবত আমার কথা বিস্মৃত হয়েছিল। পাখিটাকে খাঁচা থেকে বের করে সবগুলো পিঁপড়া হঠাতে প্রচুর সময় লেগে যায়। এতে করে পিঁপড়া যে দু-চারটা মারা পড়ে না এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না। প্রকৃতির নিয়মের ব্যতয়- একটা প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে যে আরও দু-চারটে প্রাণ যাচ্ছে। পাখিটাকে আর খাঁচায় রাখা যবে না আবারও পিঁপড়া মহাশয়দের আগমণ হবে।
ছোট্ট শরীরটা আমার হাতের মুঠোয় আলতো করে ধরে রাখতে মোটেও সমস্যা হয় না। ধুকধুক করে এর প্রাণশক্তি এখনও টিকে আছে। একবার মনে হলো সম্ভবত স্পন্দনটা থেমে গেছে। কিন্তু অনুমান ভুল প্রমাণিত করে এ ঠিকই টিকে রইল।

বাঁ হাতে ধরে রেখে অন্য হাতে ফোনে কথা বলি, ভাত খাই। মহা মুসিবত, ব্যাটা যে টিকে আছে! আমার কেন যেন মনে হলো একে এভাবে মুঠোয় আটকে না-রেখে মৃত্যুটা তার মত করেই হতে দেওয়াটাই সমীচীন। থাকুক নীচে, চোখের সামনে। কিন্তু ছাপার অক্ষর বলি, প্রাণবায়ু তো আর বের হয় না। ধুর, মরে না কেন ছাই! একটা তুচ্ছ পাখি নিয়ে ঝিম মেরে বসে থাকার সময় কোথায় আমার। দেশের কত বড়-বড় সমস্যা এই নিয়ে একটা লেখা না-নামিয়ে ফেললে তো চলছে না। আমি মানুষ পদবাচ্য নই এ সত্য কিন্তু এর যে মৃত্যুযন্ত্রণা এটা চোখে দেখে অমানুষ হওয়া সম্ভব না।

রাত গড়ায়। আমি এর মৃত্যুর অপেক্ষায় আছি- মরে গিয়ে কখন আমাকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে। এক সময় এই যন্ত্রণারও অবসান হয়। গভীর রাতে মাটি খুঁড়তে কার ভাল লাগে। বিভিন্ন সময়ে ঝাউ গাছটার নীচে, যেখানে পূর্বেও বেশ অনেকগুলো পাখিকে মাটি চাপা দিতে হয়েছিল, সেখানে।

ভাগ্যিস, আশেপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেই নইলে কে বলতে পারে কোন ধারায় বমাল ধরা পড়তাম। এখন তো আমাদের দেশে নতুন-নতুন আইন হচ্ছে। সংসদে উত্থাপন হলেই এ-প্লাস পেয়ে চোখ বন্ধ করে আইন পাশ হয়ে যায়। ৫৭ ধারা সে তো পুরনো, ৫৮ বা ৮৫ ধারা নামে কখন কোন পশু-পাখি আইন পাশ হয়ে গেছে কে বলতে পারে...।

Sunday, October 19, 2014

রেলগাড়ি ঝমঝম, রেলমন্ত্রীর টমটম!

আমাদের রেলমন্ত্রী মহোদয় বিবাহ করছেন। ফরয কাজ-শুভ কাজ, আলহামদুলিল্লাহ। এমনিতে এখন অবশ্য রেলওয়ের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন মহিলা-শিশুরাও রেলের ছাদে হাওয়া-বাতাস-রোদ খেতে খেতে ভ্রমণ করার সুযোগ পাচ্ছে। রেলমন্ত্রী মহোদয়ের বিবাহের পর রেলওয়েতে আরও গতি আসবে এতে কোনও সন্দেহ নেই। 

পত্রিকা পড়ে জানলাম, রেলমন্ত্রী মহোদয় মাটির মানুষ। তিনি রাজনীতি নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত ছিলেন যে বিবাহ করার আর সুযোগ হয়নি! আমদের দেশের রাজনীতিবিদগণ বড়ই মাটির মানুষ। কেউ বিবাহ করার সময় পান না তো কেউ সংসদে, সভা-সমিতিতে মুখ হাঁ করে চোখ বন্ধ করে রাখেন। কী রহস্য? চোখ খুলে তিনি রহস্য ফাঁস করেন! তিনি নাকি ঘুমাননি ঘুমের ভান ধরে দেশ-জাতির কথা চিন্তা করছিলেন। শোনো কথা, আমরা আবার কখন বললাম তিনি ঘুমিয়ে পড়েন? কেবল এটাই তো বললাম, তিনি মুখ হাঁ-মুখ ব্যাদান করে চোখ বন্ধ করে রাখেন।

যাই হোক, রেলমন্ত্রী মহোদয় ৫০০ বরযাত্রী নিয়ে নিয়ে যাবেন এবং কনের বাড়িতে উভয় দিক মিলিয়ে ১২০০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। আগামী ১৪ নভেম্বর বৌভাত অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ ভবনের হলে ৩৫০০ হাজার এবং চৌদ্দগ্রামের অনুষ্ঠানে ৩০০০০ মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
“বিদ্যমান অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ১০০ জনের বেশি অতিথি হলে জনপ্রতি ২৫ টাকা করে সরকারী কোষাগারে কর দিতে হবে। তবে অতিথি অতিরিক্ত ৪শ’ জনের বেশি হওয়া চলবে না।“ 
ছ্যা, মাত্র ২৫ টাকা- এটা কত সালের আইন কে জানে! তখন সম্ভবত চাউলের কেজি ছিল ১০ টাকা! তারপরও জনপ্রতি ২৫ টাকা করে হলে রেলমন্ত্রী মহোদয়ের বিবাহ উপলক্ষে সরকারের কোষাগারে ৯ লক্ষ টাকা জমা হবে। এ ভারী আনন্দের খবর নিঃসন্দেহে।
কিন্তু ৪০০ জনের বেশি অতিথি হওয়া চলবে না আইনের এই প্যাঁচ, এটা খানিকটা ঝামেলায় ফেলে দেবে। যাক গে, আমাদের দুঁদে আইনমন্ত্রী মহোদয় আছেন যখন এটারও একটা গতি হবে- আইন সংশোধন করে নিলেই হবে।

পত্রিকার মাধ্যমে আরো জানা যাচ্ছে, কনের বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাঘাট নির্মাণ কাজ ২৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে বলে ঠিকাদার আশা প্রকাশ করেছেন। রেলমন্ত্রী কনের বাড়িতে যাবেন টমটমে করে। এটা একটা কথা হলো! রেলমন্ত্রী মহোদয়ের টাকায় কী টান পড়েছে যে কেবল রাস্তাই সংস্কার করছেন! টমটমে কেন, রেলমন্ত্রী যাবেন রেলগাড়িতে চড়ে। কনের বাড়ি পর্যন্ত রেললাইন বসাবার জোর দাবী জানাই...।

Thursday, October 16, 2014

খুন !

আজকের অতিথি-লেখক Aminul Islam, লিখেছেন বিচিত্র এক খুন নিয়ে। তিনি লিখেছেন:
“প্রথম ছবিতে দেখুন এপোলো হাসপাতালের মেডিসিন কন্সালটেন্ট, Sharad Dayadhan Sonawane (ভারত থেকে আসা Specialist) কর্তৃক এমারত হোসেন নামের এক বয়স্ক রোগীকে দেয়া পেপটিক আলসারের প্রেসক্রিপশন । পরের ছবিটিতে দেখুন একই ব্যাক্তিকে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট (Death Certificate)। সময়ের ব্যবধান মাত্র চার দিন ।

এই ৫৮ বছর বয়স্ক ডায়াবেটিক রোগীটি এপোলোতে গিয়েছিলেন পেটের উপরি অংশে জ্বালাপোড়া নিয়ে- যা কোনও গ্যাষ্ট্রিকের ওষুধেই কমছিল না। এমতাবস্থায় যে-কোনও জুনিয়র চিকিৎসকও তাকে একটা ECG করাতেন, সেটাই নিয়ম । কিন্ত হাজার টাকা ফিসের বিদেশী ডাক্তার, জৌলুষময় কর্পোরেট হাসপাতাল এসব কিছুই তার হার্ট-আট্যাকটা সময়মত diagnosis করে দিতে পারলো না শুধু একটা ECG না-করানোর কারণে। পরে যখন কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না তখন সরকারী হাসপাতালে নিয়ে ECG করালে তার গুরুতর হার্ট-আট্যাক (Myocardial Infarction) ধরা পড়ে । কিন্তু ততক্ষণে অনেক মহামুল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গেছে । অবশেষে হৃদরোগ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
হার্ট আট্যাকের বেলায় ’Minute means Muscle’ যার অর্থ এক মিনিট আগেও যদি চিকিৎসা শুরু হয় তবে বেঁচে যায় কিছু heart muscle। যত মিনিট বিলম্ব তত বেশী হৃৎপেশীর মৃত্যু। এক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসা শুরুর বিলম্ব করা মানে গুরুতর অপরাধ করা। সেই অপরাধটুকুই করেছেন এপোলোর কথিত এই বিশেষজ্ঞ। নাকি Dayadhan সাহেবও আমাদের খোরশেদ স্যারের মতো ইন্ডিয়ায় ধাওয়া খাওয়া কোন ওয়ার্ডবয়? ওখানে ধরা খেয়ে এদেশে তসরীফ এনেছেন!

প্রেসক্রিপশনটাতেও বানিজ্যিক শোষণ প্রক্রিয়াও লক্ষনীয়। বুকপেট ব্যথার রোগীকে অযথাই কিছু ভিটামিন দিয়ে দেয়া হয়েছে যার প্রতিটা ট্যাবলেটের মুল্য ৮০ টাকা। ১৯০০ টাকার প্রেসক্রিপশনে ১৬০০ টাকাই ভিটামিন। ডাক্তার যেহেতু বিদেশী বিশেষজ্ঞ তাই পরম বিশ্বাসে সব কিনে নেওয়া হয়েছে। যে বড় হাসাতালের বড় ডাক্তারকে তিনি আরাধ্য মানলেন । হার্ট-আট্যাকের রোগী হয়ে গ্যাষ্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে শেষমেষ তার হাতেই তিনি খুন হলেন।“ Aminul Islam 

এপোলো হাসপাতাল নিয়ে ভিন্ন এক লেখা লিখেছিলেন, Rukhsana Tajin, ‘এ-তে এপোলো, বি-তে বুচার...’। লেখাটা তিনি লিখেছিলেন নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে- যখন এই হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন, অনাগত সন্তান তাঁর পেটে [১]

১. এ-তে এপোলো: http://www.ali-mahmed.com/2014/01/blog-post_504.html

Wednesday, October 15, 2014

মনে বড়ো সাধ জাগে!

EmOn SarWar , আজকের অতিথি লেখক, লিখেছেন ভিন্ন এক বিষয় নিয়ে। আমাদের দেশে যাদের পূর্বপুরুষ ইরান-তুরান-ইয়েমেন থেকে মাছের পিঠে করে এসেছেন তাঁদের প্রতি এক প্রকারের হাহাকার উঠে এসেছে তাঁর লেখায়। মনিটর ভেদ করে এই হাহাকার আমাকেও স্পর্শ করে। আমিও তীব্র হিংসায় জ্বলে-পুড়ে ছাই হই তাদের প্রতি, যারা আরব থেকে বাঘের পিঠে করে এদেশে এসেছিলেন।

EmOn SarWar লিখেছেন:
“আমার পূর্বপূরুষরা নেংটি পড়ে ফেনী নদীর তীর ঘেঁষে ধান চাষ করত! খর্বকায়, শ্যামবর্ণ আর মোটা নাক ছিল তাদের। মেদহীন চকচকে কালো দেহে পাকধরা পেশীগুলো ঘামে ভিজে সূর্যের আলোয় চিকচিক করত! এক সময় ফেনী নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে। বহমান তীব্র স্রোত স্থিমিত হয়ে বদ্ধ জলাশয়ের রূপ নেয়।
সে জলাশয় বাঁধ দিয়ে পুকুর হলো, আর পাশে জেগে উঠা বালু চরে বসতবাটি। যে অংশটুকু কেউ দখল করতে পারেনি সেটা হল গিয়ে জল মহাল।

আমার পূর্বপূরুষরা অনেকেই কৈবর্ত্য হল। সারা দিন জাল বুনে, সেলাই করে আর ভোর রাতে শীর্ণ শরীরে শরিষার তেল মেখে নেংটি পড়ে জাল টানে! আমাদের ওখানে চক্রবর্তী সম্রাট না-থাকলেও চক্রবর্তী ব্রাহ্মণ ছিল, মজুমদার ছিল। এরা জমি জিরাতের মালিকও ছিল। সে অর্থে জমিদার বটে। ওদের ঈশ্বর ছিল, মন্দির ছিল, পুজা-পার্বণ ছিল! আর আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর ধারণা শুধু তাদের দন্ডনায়ক হিসেবেই। তারা ভয়ে-ভয়ে থাকত নিজের ও পূর্বপূরুষের অজানা পাপের জন্য তখনও না -পাওয়া শাস্তি নিয়ে!

তখন অবশ্য পারস্য-আরবের ‘মহীসাওয়াররা’ আসা শুরু করেছে। তাদের পথ ধরে, সাগর আর নদীপথে ইসলাম খান চিশতী, বুজুর্গ উমিদ খান আর ছূট্টি খানরাও আসা শুরু করেছেন। আরক্কানী মগ'দের দৌরাত্ব ততদিনে শেষ! শাহ সুজা দিল্লীর মসনদের দৌড়ে হার মেনে প্রাণ নিয়ে আমার পূর্বপূরুষদের অর্ধনগ্ন দেহ আর কালো চোখের সামনে দিয়েই আরকানে পাড়ি জমিয়েছেন।
যাবার পথে রুগ্ন খাদিম আর আহত পাঠান সেনাদের এখানেই ফেলে গেছেন! তাদের দীর্ঘকায় গড়ন, শ্মশ্রুধারী কন্দর্পকান্তি মুখমন্ডল আর ফার্সী উর্দ্দু বয়ান আমার 'ছোটলোক' পূর্বপূরুষদের মুগ্ধ করেছিল হয়ত। রায়, চক্রবর্তি আর মজুমদারদের চেয়ে এদের ফর্সা চেহারা, বিজাতিয় ভাষা আমার পূর্বপুরুষদের কাছে অনেক বেশি দেবতুল্য আর স্বর্গীয় মনে হয়েছিল। এরপর থেকে আমার পূর্বপুরুষেরাও দীক্ষিত হল ওদের বিশ্বাসে, নেংটি ছেড়ে লুংগি পরা ধরল!

...এরপরও মাটি কচলে ধান চাষ করে আর জাল ফেলে মাছ ধরেই বহু যুগ পার করেছে আমার পূর্বপুরুষরা! আমার বাবা সে জীবন পেছনে ফেলে শহরমুখী হয়েছেন- লুংগি ফেলে পাৎলুন ধরেছেন; আমিও তাই।
কিন্তু আজকাল, মাঝে-মাঝে মনে বড্ড সাধ জাগে- আহা, আমার পূর্বপুরুষরা যদি ইরান-তুরান-ইয়েমেন থেকে মাছের পিঠে চড়ে বাংগাল মুল্লুকে আসতেন! আমার নাম যদি শেখ বা সৈয়দ হতো কিংবা নিদেনপক্ষে উত্তর ভারতের চৌধুরি বা ফ্রন্টিয়ারের খান তাহলে তো আমিও বলতে পারতাম ...!
কিন্তু হায়, হীনজন হয়ে ছিলাম তখনও, এখনও যেমন আছি ...!” EmOn SarWar

Monday, October 13, 2014

দুর্ভোগ এবং এক প্রকারের জন্তু!

প্রতি ঈদে ঘরফেরা মানুষের যে বর্ণনাতীত কষ্ট হয় এটা ভুক্তভোগি ব্যতীত অন্য কারও বোঝার উপায় নেই। হয়তো খানিকটা আঁচ করা চলে, ব্যস, এই!
পত্রিকায় নিয়ম করে ইদের আগে-পরের এই সংশ্লিষ্ট ছবি ছাপা হয়। মানুষে উপচেপড়া লঞ্চ-ট্রেন। বহুলব্যবহৃত একটা শব্দ ব্যবহার করা হয়,‘দুর্ভোগ’। এই দুর্ভোগের নমুনা খানিকটা অনুভব করলাম আজ।

‘মহানগর প্রভাতী’ নামের এই ট্রেনটায় ১৬টা বগি। এরমধ্যে ১০টাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত! আমাদের রেল কর্তৃপক্ষের কেমন কেমন করে যেন একটা ধারণা জন্মেছে এই দেশের অধিকাংশ লোকজনেরই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার প্রয়োজন। ট্রেন ঢোকামাত্র মনে হলো কেউ যেন মৌমাছির বাসায় ঢিল ছুড়েছে। সে দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। বিপাকে পড়লেন নারী যাত্রী- লজ্জার মাথা খেয়ে নিরুপায় হয়ে এরা ছাদে উঠার চেষ্টা করতে লাগলেন। এটাকে দুরাধর্ষ-দুর্ধর্ষ কাজ বললেও কম বলা হয়। কী দুঃসাধ্য এক কাজ! কী মনখারাপ করা এক দৃশ্য। অসহায়ের মত তাকিয়ে থাকা ব্যতীত কিছুই করার নেই।

‘মহানগর প্রভাতী’ নামের এই ট্রেনটা ঢাকা থেকে ছাড়ে সকাল ৭টায়। দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম পৌঁছার নিয়ম। পরে আমি জানতে পেরেছিলাম ওদিন এই ট্রেনটা চট্টগ্রামে পৌঁছেছিল রাত সাড়ে নটায়! আমাদের রেলমন্ত্রী মহোদয় বিবাহ নিয়ে ব্যস্ত। নইলে বলতাম, মন্ত্রী মহোদয়, একটু চোখ বন্ধ করে ভাবার চেষ্টা করুন তো একজন মহিলা মানুষ-শিশু এই প্রখর রৌদ্রে ট্রেনের ছাদে প্রায় সারাটা দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন। কোথায় পানি, কোথায় খাওয়া, কোথায় বাথরুমের ব্যবস্থা?

ব্যাপারটা এখান পর্যন্তই চুকে গেলে আমি বেঁচে যেতাম। কিন্তু আমি হতভম্ব-হতবাক হয়ে লক্ষ করে দেখলাম এতে অনেকেই বিমল আনন্দ পাচ্ছেন। মানুষের দুর্দশায় এমন আনন্দ আসে কোত্থেকে! কারণ আমাদের তোরতরিবত-শিক্ষাদীক্ষায় ঝামেলা আছে। ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান, শারীরিকভাবে অসুবিধাসম্পন্ন মানুষকে দেখে আমরা অবজ্ঞার হাসি ছুড়ে দেই। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা মানুষদেরকে দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই। চুতিয়া লেখক স্যাররাও পাগল নাম দিয়ে এক চরিত্র সৃষ্টি করে আমাদেরকে হাসিখুসি রাখার চেষ্টা করেন। চারদিকে আনন্দই আনন্দ!

হাতের নাগালে মুখভরানো হাসিতে হাসতে থাকা এক জন্তুকে পেলাম। কিছু বাতচিত হলো। এই বাতচিতের বিশদ বর্ণনা এখানে জরুরি না। আহা, যাদের এমন বদ্ধমূল ধারণা আছে আমি সর্বদাই ‘ছাপার অক্ষরে’ কথা বলি তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত করার কী দায় পড়েছে আমার। কেবল বলি, জঙ্গলে চলে জঙ্গলের আইন- জন্তুর সঙ্গে বলতে হয় জন্তুর ভাষা...।

Sunday, October 12, 2014

হায় দেশ, এমন পাশবিকতার জন্ম দিলে কেমন করে!

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৯ অক্টোবর, ২০১৪
সিলেটের শ্রীমঙ্গলে একটা বধ্যভূমি ছিল, ‘বধ্যভূমি ৭১’। এটা এখন তাহলে পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গেছে? কেবল পর্যটন কেন্দ্রই হয়ে যায়নি অন্য বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলো যেমন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিচ্ছে! বাহ, বেশ তো! ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’।

আমার মত আমজনতার এটা জানাই হতো না যদি না মিডিয়া আমাদেরকে জানাতো। ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ নামের দৈনিকটি ছবির অকাট্য প্রমাণ দিয়ে আমাদেরকে সদর্পে জানাচ্ছে। ভাগ্যিস, এরা ছবি দিয়েছে। ছবি না-দিলে আমার মত মানুষ বিশ্বাস করতেই চাইত না।
এমনিতে এই পত্রিকাটির দাবী এরা ‘দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক’ এবং এদের আরও জোর দাবী, ‘আমরা জনগণের পক্ষে’। আহ, আমাদের মিডিয়া- হাতে কিল মেরে তিন উল্লাসে বলি, এই না হলো গিয়ে আমাদের মিডিয়া! হবেই-বা না কেন? সমস্ত মিডিয়াই তো শাহআলম সাহেবদের মত টাইকুনদের বগলে।
তিনি আবার খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন সন্তানের গর্বিত পিতা এবং খুনটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় পরোক্ষ খুনিও বটে। গোল্ডা মায়ারের সেই বিখ্যাত কথা, ‘নিজ হাতে হত্যা করা বা হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া অথবা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই’।

কেবল এই পত্রিকাটিকেই চুতিয়া বলাটা সমীচীন হবে না কারণ এটা সত্য এদের তথ্যের উপস্থাপনায় বিকট চুতিয়াগিরি আছে কিন্তু যেসমস্ত মানুষেরা ‘বধ্যভূমি ৭১’ উল্লাস করতে গিয়েছিলেন, যে প্রশাসন এই উল্লাস করার সুযোগ করে দিয়েছেন এরা সবাই একই পথের পথিক।

মাছের পচন নাকি শুরু হয় মাথা থেকে। দেশ নামের বিশাল এই মাছটার মাথা পচে গেছে সেই কবেই! বাকী ছিল শরীরের অন্য অংশগুলো এগুলোতেও পচন ধরেছে। দেশ নামের এই পৃথুল মাছটা ফরমালিনের জারে চুবানো আছে বলে আমরা টের পাচ্ছি না। যেদিন জারটা ভেঙ্গে পড়বে সেদিন পচনের তীব্র-উৎকট গন্ধে আমরা সবাই হড়হড় করে বমি করে দেব। কে জানে, হয়তো-বা কালে কালে সেই ‘বমির সৈকত’ নামে চমৎকার এক পর্যটন কেন্দ্র চালু হবে। সেখানে আমরা দলে দলে গিয়ে বমিতে গা ভাসিয়ে অমায়িক আনন্দ করব...।

Saturday, October 11, 2014

হা!

এই মানুষটার একটা নাম আছে বটে তবে কারও কারও নামে কী আসে যায়! কিছু-কিছু মানুষ আছেন যাদের নিয়ে আস্ত একটা উপন্যাস নামিয়ে ফেলা যায় কিন্তু এঁদের নিয়ে লেখা হয়ে উঠে না, জানি না কেন! আজও লেখা হতো না হয়তো। কিন্তু...।

কর্পোরেট ভুবনের দুঁদে এই মানুষটাকে দেখে আমার বড়ো দুঃখ হতো। মনে হতো কী অভাগা এই মানুষটা! অদৃশ্য এক জালে আটকা পড়ে আছেন। আটকা পড়ে আছে শিশুর মতো একটা মন।
স্বপ্ন তো দেখে সবাই কিন্তু স্বপ্ন দেখাতে পারেন ক-জন! সেই অল্প কিছু দুর্লভ মানুষদের একজন। এই মানুষটা যে বুক-পকেটে স্বপ্নের 'পোকা' নিয়ে ঘুরে বেড়ান। পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ালে সমস্যা ছিল না কিন্তু কতবারই না মানুষটা আমার মাথায় আলগোছে স্বপ্নের পোকা' ছেড়ে দিয়ে সটকে পড়েছেন।

ঢাকা নামের কংক্রিটের বস্তিতে মানুষটার বাস অথচ যে মানুষটার মন পড়ে থাকে জ্যোৎস্নায় ভেসে যওয়া ধ্যানরত সেই মুনির সংস্পর্শে। মানুষটার সঙ্গে আমার দেখা হয় কালেভদ্রে। কারণ বছর গড়িয়ে যায় ঢাকা যাওয়া হয় না আমার।
তিতিবিরক্ত হয়ে আজ সেই মানুষটাই আমার এখানে চলে আসেন। হিজিবিজি-হাবিজাবি কত কথা। সময় গড়ায় দ্রুত। আমি আধ-হাত লম্বা চুরুটটা ত্যক্ত হয়ে ফেলে দেই- ধুর, আমি তো চার্চিল, চে না যে ভকভক করে স্টিম-লোকোমোটিভের মত ধোঁয়া উগরে দেব।

আমার সংগ্রহের রাজ্যের আবর্জনা থেকে বের হয় মরচেধরা তির-ধনুক। আমি টার্গেটের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলাম, ঢাউস টার্গেটটার পাশ ঘেঁসে- লাগেইনি! এমনিতে আমি ছবি সম্বন্ধে কিছু না-বুঝেও ফটাফট ছবি তুলি সেল-ফোনে, অন্যদের ছবি তোলার যন্ত্র নামের কামানগুলোর পাশে দাঁড়িয়েও। সার্জন থেকে নাপিতের যেমন সাহস থাকে বেশি, তেমনি। 

মানুষটার ছবি দেখে আমি হাঁ। এই ছবিটা ভাল করে লক্ষ করে দেখলাম তিনি যখন তির ছুড়েছেন তিরের ছুটে যাওয়ার প্রায় পুরোটাই ধরা পড়েছে। কামানওয়ালারা এটা দেখে দ্বিতীয়বার তাকাবেন না এটা আমি নিশ্চিত কিন্তু আমি বিমুগ্ধ। পুরো কৃতিত্ব ক্যামেরা নামের এই জিনিসটার। আফসোস, ক্যামেরা নামের এই জিনিসটা যদি পুরুষ হতো তাহলে তিন উল্লাসে বলতাম, মরদ বটে একখান। আর মহিলা হলে...।

Thursday, October 2, 2014

আমাগো ‘মনতিরি’ বাহাদুর!

কালে-কালে ‘মনতিরি’ বাহাদুরদের আগমন ঘটে। বিএনপির সময় একজন ‘মনতিরি’ বাহাদুর ছিলেন তিনি গুড়ো দুধের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমাদেরকে সময় অবগত করিয়েছিলেন, ‘আমার ছয় বছরের ছেলে এখনও মার দুধ খায় আমি নিজে বারো বছর পর্যন্ত মার দুধ খেয়েছি’
সেই ‘মনতিরি’ বাহাদুর বারো বছর কেন আরো ক-বছর লাগিয়ে দুধ খেলেও আমাদের বলার কিছু ছিল না। তাই হয়তো এই ‘মনতিরি’ বাহাদুর ছিলেন গোলগাল-তনদুরস্ত ছিলেন!

সেই সময়কার আরেক ‘মনতিরি’ বাহাদুর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘বিল গেটস কম্পিউটার বিক্রি করিয়া এই দেশ থিক্যা কুটি-কুটি টাকা নিয়া যাইতেছে’
শোনো কথা, বিল গেটস ব্যাটা নাকি কম্পিউটার বিক্রি করে!

হালের একজন ‘মনতিরি’ বাহাদুর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে দেশ উত্তাল। তিনি অতি কুৎসিত যে-সমস্ত বাতচিত করেছেন তা এখানে বলে আর চর্বিতচর্বন করি না। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সবাই জেনে গেছেন। তবে কিছু বিষয় আমার খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। যেমন, এক পত্রিকায় লিখেছে, "...একই সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকী ধর্ম নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর এসব অস্বাভাবিক কথাবার্তায় সভাস্থলের ভিতরে এবং বাইরে প্রচন্ড ক্ষোভের সঞ্চার হলে এক পর্যায়ে তাকে অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যেতে হয়। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয়কে নিয়ে খোদ ক্ষমতাসীন দলের একজন মন্ত্রীর এমন কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্যে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।..." 
‘বিশেষ করে’, এই বিশেষ করেই বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে!

পত্র-পত্রিকায় এখন ছেয়ে গেছে, ‘দুর্নীতির পাহাড়ে লতিফ’, ‘লতিফের শত-শত কুকর্ম’ ইত্যাদি ইত্যাদি। লতিফ যখন পাট মন্ত্রণালয়ে ছিলেন তখন নাকি সরকারের হাজার-হাজার কোটি টাকা নষ্ট করেছিলেন। এই সমস্ত তথ্য এখন গিয়ে জানা যাচ্ছে। কেউ জানত না! না আমাদের প্রধানমন্ত্রী, না গোয়েন্দা সংস্থা, না দুদক। এখন গিয়ে জানা যাচ্ছে দেশে ফিরলেই দুদকের মুখোমুখি হতে হবে লতিফ সাহেবকে। দুদক এখন হুড়মুড় করে জেগে উঠেছে- যেন সুপ্ত আগ্নেয়গিরি!

লতিফ সাহেব বিভিন্ন প্রসঙ্গে বিস্তর কুৎসিত কথা বলেছেন। বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তিনি অনুতপ্ত নন। এই নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নাই। কে অনুতপ্ত হবে, কে তপ্ত এটা তার নিজস্ব বিবেচনা। আমার বক্তব্য অন্য খানে। বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন...।
বিবিসি: '...সরকারের মন্ত্রী হিসাবে সেই বক্তব্য দেবার ক্ষেত্রে আপনার কিছু বিধিনিষেধের অধীনে থাকতে হতে পারে'

লতিফ: 'হ্যাঁ, বিধিনিষেধ আছেই। সেটা তো আমি আমার দেশে করি নাই। আমি ভাবছিলাম মুক্ত পৃথিবীতে আসছি, যেখানে সবাই মুক্ত বিহঙ্গ, এখানে কোনও কিছুতেই বাধা নাই। এখানে যে কালো বিড়াল এত রয়ে গেছে তা তো আমি জানি না।..."

আমাগো 'মনতিরি' বাহাদুর নিশ্চয়ই এই ধর্মীয়স্বাধীনতার কথা বলছেন না? FREEDOM OF THOUGHT AND RELIGION:

18. "Everyone has the right to freedom to thought, conscience and religion; this right includes freedom to change his religion or belief, and freedom, either alone or in community with others and in public or private, to manifest his community or belief in teaching, practice, worship and observance." (The Universal Declaration of Human Rights [UDHR]) 

তাছাড়া...ওহো, আমাগো ‘মনতিরি’ বাহাদুর একেবারেই বিস্মৃত হয়েছেন তিনি এই প্রজাতন্ত্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী। আমেরিকা কেন মঙ্গলগ্রহে গেলেও একজন বেতনভুক্ত কর্মচারীর যা খুশি বলার, করার অধিকার নাই। আফসোস, এটা আমাদের দেশের অধিকাংশ বেতনভুক্ত কর্মচারীই মনে রাখেন না...।