বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছেয়ে গেল দেবাশীষ দাস নামের একজন ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেছেন এবং তাকে গ্রেফতার করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পত্রিকার একটা লিংক: (http://www.jugantor.com/bangla-face/2014/11/06/169648)
এরই রেশ ধরে দেবাশীষের বাড়ি যেটার নাম, ‘দয়াময় শান্তি নীড়’ ভাংচুর করা হয়েছে এবং হিন্দু ধর্মাম্বলীদের লোকনাথ মন্দির, কালীমন্দির, রামঠাকুরের মন্দির, দয়াময় মন্দির, অনুকুল ঠাকুর মন্দিরসহ পাঁচটি মন্দিরে হামলাও করা হয়েছে। রামঠাকুর, দয়াময় এরা কেউই দেবাশীষকে বলেননি, যাও, বেটা মুসলমানদেরকে উসকে দিয়ে এসো কিন্তু ঠিকই এদের মন্দিরে আঘাত এসেছে।
দেবাশীষ অন্যায় করে থাকলে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আসবে কিন্তু জোশভরা মুসলিম ভাইয়েরা যে আচরণ করলেন এটার উত্তর খোঁজা বাতুলতা মাত্র। বা এই জোশিলা ভাইজানদের আইনের আওতায় আনা হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করাও! ‘সংখ্যলঘু’ নামে একটা চলমান দানব আছে যার কাঁধে ভর দিয়ে বাংলাদেশে অনায়াসে মন্দির ভেঙ্গে ফেলা যায় আবার ভারতেও ঈদের জামাতে শুয়োরের পাল ছেড়ে দেয়া যায়। বিভিন্ন ছলাকলায় আইন এদের কেশাগ্রও স্পর্শ করার সুযোগ পায় না।
দেবাশীষকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে...আপাততদৃষ্টিতে সব্ই সোজাসাপটা। কিন্তু এটা জানা প্রয়োজন যে দেবাশীষ অন্যায়টা করেছিলেন কি? তিনি লালনের একটি গান ফেসবুকে শেযার করেছিলেন। যেটা মোশতাক আহমেদ সম্পাদিত ‘লালন বেদের গোপন খবর’- বইয়ের ১৪১ নম্বরে আছে। লালনের এই গানটি কি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ? উত্তর হচ্ছে, না। তাহলে এটা শেয়ার করে দেবাশীষ কি এমন গুরুতর অপরাধ করেছেন।
তদুপরি ফেসবুকে এই গানটি শেয়ার করার পর ফেসবুকে অনেকে আপত্তি জানালে দেবাশীষ দুঃখপ্রকাশও করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “আমি (ইসলাম ধর্মকে) নিয়ে কোনও খারাপ কথা লিখিনি। আমি একজন নিরাকার উপাসক। আমি লালনের একটি গান শেয়ার করেছি। এতে কোনও ভাই কষ্ট পেলে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী”।
দেবাশীষ সাধক মহর্ষি মনমোহন দত্তের অনুসারি। বাড়ির নামের সঙ্গে যেমন দয়াময় যুক্ত আছে তেমনি তিনি নিজের নামের সঙ্গে দয়াময় যুক্ত করেছেন, ‘দেবাশীষ দয়াময়’।
দেবাশীষ অন্যায় করে থাকলে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আসবে কিন্তু জোশভরা মুসলিম ভাইয়েরা যে আচরণ করলেন এটার উত্তর খোঁজা বাতুলতা মাত্র। বা এই জোশিলা ভাইজানদের আইনের আওতায় আনা হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করাও! ‘সংখ্যলঘু’ নামে একটা চলমান দানব আছে যার কাঁধে ভর দিয়ে বাংলাদেশে অনায়াসে মন্দির ভেঙ্গে ফেলা যায় আবার ভারতেও ঈদের জামাতে শুয়োরের পাল ছেড়ে দেয়া যায়। বিভিন্ন ছলাকলায় আইন এদের কেশাগ্রও স্পর্শ করার সুযোগ পায় না।
দেবাশীষকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে...আপাততদৃষ্টিতে সব্ই সোজাসাপটা। কিন্তু এটা জানা প্রয়োজন যে দেবাশীষ অন্যায়টা করেছিলেন কি? তিনি লালনের একটি গান ফেসবুকে শেযার করেছিলেন। যেটা মোশতাক আহমেদ সম্পাদিত ‘লালন বেদের গোপন খবর’- বইয়ের ১৪১ নম্বরে আছে। লালনের এই গানটি কি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ? উত্তর হচ্ছে, না। তাহলে এটা শেয়ার করে দেবাশীষ কি এমন গুরুতর অপরাধ করেছেন।
তদুপরি ফেসবুকে এই গানটি শেয়ার করার পর ফেসবুকে অনেকে আপত্তি জানালে দেবাশীষ দুঃখপ্রকাশও করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “আমি (ইসলাম ধর্মকে) নিয়ে কোনও খারাপ কথা লিখিনি। আমি একজন নিরাকার উপাসক। আমি লালনের একটি গান শেয়ার করেছি। এতে কোনও ভাই কষ্ট পেলে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী”।
দেবাশীষ সাধক মহর্ষি মনমোহন দত্তের অনুসারি। বাড়ির নামের সঙ্গে যেমন দয়াময় যুক্ত আছে তেমনি তিনি নিজের নামের সঙ্গে দয়াময় যুক্ত করেছেন, ‘দেবাশীষ দয়াময়’।
( Masuk Hridoy ) বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে যেটা জেনেছেন সেটা এখানে তুলে দেই,
“চরলালপুর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ি মাসুদ রানা বলেন, দেবাশিষ একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। তাকে এলাকার মানুষ ভাল ছেলে ও নিরীহ প্রকৃতির হিসেবেই চেনে ও জানে। কোন ধরণের উসকানির উদ্দেশ্যে সে এমন কাজ করেনি।“
“লালপুর বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি বলেন, এলাকার কিছু টেটনা (বদ) দেবাশিষকে ঘায়েল করতে অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে ক্ষিপ্ত করেছে।“
“দেবাশীষের মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট নাসির মিয়া বলেন, ... আর যদি দিয়েও থাকে (লালনের গান) তাহলে এটা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দন্ডনীয় অপরাধ নয়। যেহেতু লালনের গানটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ নয়, সেহেতু এটা অবিকৃত অবস্থায় প্রচার করলে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এটা অপরাধ নয়। আর যদি এতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত আসে তাহলে সরকারেরই উচিত এটা নিষিদ্ধ করা। তিনি (আরও) বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি সংক্রান্ত বিরোধে স্থানীয় প্রতিপক্ষের কিছু নেতা কথিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ছুতোয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় তাকে আসামি করেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জানালার কাঁচ ও মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।“
এই গান লেখার অপরাধে লালনকে অবিলম্বে তথ্য ও যোগাযোগ আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবী জানাই পাশাপাশি ‘আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!’, এটা লেখার জন্য কাজী নজরুল ইসলামকেও। এঁদের দুজনের নামে হুলিয়া জারি হোক, অবিলম্বে...।
* ছবি এবং বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন, Masuk Hridoy। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
**লেখাটা ফেসবুকে শেয়ার করার পর আমার একটা গুরুতর ভুল ধরিয়ে দেন প্রজন্ম ছিয়াশি। ওখানে তিনি মন্তব্য করেন,
"জোশভরা মুসলিম ভাইদের উল্লেখ না করলেই ভাল হতো, কারণ দেবাশিসের আইনজীবী কি বলেছে?
" ...'তিনি (আরও) বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি সংক্রান্ত বিরোধে স্থানীয় প্রতিপক্ষের কিছু নেতা কথিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ছুতোয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় তাকে আসামি করেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জানালার কাঁচ ও মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি'।
মানে কমিটি নিয়ে ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ ক্যাচাল এটা। জোশভরা মুসলিম ভাইদের কথা না বলে ষড়যন্ত্রকারী জোশভরা ছাত্রলীগ ভাইদের কথা বলুন।"
“লালপুর বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি বলেন, এলাকার কিছু টেটনা (বদ) দেবাশিষকে ঘায়েল করতে অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে ক্ষিপ্ত করেছে।“
“দেবাশীষের মামলার আইনজীবি অ্যাডভোকেট নাসির মিয়া বলেন, ... আর যদি দিয়েও থাকে (লালনের গান) তাহলে এটা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দন্ডনীয় অপরাধ নয়। যেহেতু লালনের গানটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ নয়, সেহেতু এটা অবিকৃত অবস্থায় প্রচার করলে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এটা অপরাধ নয়। আর যদি এতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত আসে তাহলে সরকারেরই উচিত এটা নিষিদ্ধ করা। তিনি (আরও) বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি সংক্রান্ত বিরোধে স্থানীয় প্রতিপক্ষের কিছু নেতা কথিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ছুতোয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় তাকে আসামি করেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জানালার কাঁচ ও মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।“
এই গান লেখার অপরাধে লালনকে অবিলম্বে তথ্য ও যোগাযোগ আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবী জানাই পাশাপাশি ‘আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!’, এটা লেখার জন্য কাজী নজরুল ইসলামকেও। এঁদের দুজনের নামে হুলিয়া জারি হোক, অবিলম্বে...।
* ছবি এবং বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন, Masuk Hridoy। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
**লেখাটা ফেসবুকে শেয়ার করার পর আমার একটা গুরুতর ভুল ধরিয়ে দেন প্রজন্ম ছিয়াশি। ওখানে তিনি মন্তব্য করেন,
"জোশভরা মুসলিম ভাইদের উল্লেখ না করলেই ভাল হতো, কারণ দেবাশিসের আইনজীবী কি বলেছে?
" ...'তিনি (আরও) বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি সংক্রান্ত বিরোধে স্থানীয় প্রতিপক্ষের কিছু নেতা কথিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ছুতোয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় তাকে আসামি করেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জানালার কাঁচ ও মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি'।
মানে কমিটি নিয়ে ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ ক্যাচাল এটা। জোশভরা মুসলিম ভাইদের কথা না বলে ষড়যন্ত্রকারী জোশভরা ছাত্রলীগ ভাইদের কথা বলুন।"
আমার উত্তর ছিল:
"এই লেখার সঙ্গে ‘জোশভরা মুসলিম ভাইয়েরা’ থাকাটা কেবল অসামঞ্জস্যই না, অপরাধও বটে। এখানে ‘জোশভরা মানুষ’ লেখাই সমীচীন ছিল।
এটা আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। তদুপরি এর দায়-দায়িত্ব আমার উপরই বর্তায়। দায়টা আমার কাঁধে নিয়ে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করি। এবং ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।"
এটা আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। তদুপরি এর দায়-দায়িত্ব আমার উপরই বর্তায়। দায়টা আমার কাঁধে নিয়ে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করি। এবং ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।"
No comments:
Post a Comment