‘শত্রুর মুখে ছাই’, বাংলা ভাষায় চালু একটা বাক্য। এই বাক্যটা ধার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল। তবে খানিকটা বদলে, মিডিয়ার মুখে ছাই...।
সুরুয মিয়া মৃত্যুর অপেক্ষায় নামের লেখাটায় [১] আমি লিখেছিলাম: “...এই দীর্ঘ এক মাস পার হওয়ার পরও পত্রিকার লোকজন কোনও প্রকারেই এটা নিয়ে কাজ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ বোধ করেননি। কেন? তারা কী সুরুযের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন? আচ্ছা,সুরুযের মৃত্যু কি তাকে পত্রিকায় স্থান দেবে? আশা করছি দেবে। তাহলে এটা হবে সুরুযের জন্য অতি আনন্দের একটা সংবাদ নিঃসন্দেহে। সুরুয মরিয়া প্রমাণ করিল সে পত্রিকায় চেহারা দেখাবার যোগ্য।...”
কিন্তু আজ আমি অতি দুঃখের সঙ্গে মিডিয়াকে জানাচ্ছি যে সুরুয বাঁচিয়া প্রমাণ করিলেন তিনি মরেন নাই। আফসোস, না-মরে তিনি মিডিয়াকে অনেকখানি বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন। ছি! সুরুয নামের লোকটার বিবেক বলে কিছু আছে বলে তো মনে হয় না! কেননা, সুরুয মিয়া না-মরা পর্যন্ত তো তাকে নিয়ে নিউজ করার কোনও সুযোগ নাই। আর সেটা তো মারা য্ওয়ার পরই কেবল সম্ভব। তখন নিউজ মানে লাইনেজ হিসাবে টাকা। পাল্লা দিয়ে নিউজের লাইন বাড়বে টাকাও বাড়বে। আর যদি অফিস ছবি ধরে ফেলে তাহলে ছবির জন্য আলাদ থোক টাকা।
এ সত্য, সুরুয মিয়ার মৃতদেহের ছবি ছাপাবার কোনও সুযোগ এখানে নাই, এটা তো অপঘাতে মৃত্যু না। এখানে ভিন্ন পথ ধরতে হবে। ক্যামেরা তাক করে রাখতে হবে সুরুয মিয়ার স্ত্রী এবং মার দিকে। মার ছবি তুলতে হয়তো অনেকে আগ্রহ বোধ করবেন না কারণ কোঁচকানো চামড়ার ছবি ভাল আসবে না। ওহো, ক্যামেরা তাক করে বসে থাকলেই তো হবে না বুকফাটা কান্নার ছবি যে বড়ো প্রয়োজন। না-হলে তো পাবলিক খাবে না। কী উপায় তাহলে? মহিলাকে কাঁদাবার চেষ্টা করতে হবে, সবিরাম। প্রশ্নের পর প্রশ্ন ছুড়ে দিতে হবে। চালু প্রশ্ন, ‘স্বামী হারিয়ে আপনার অনুভূতি কি এখন’? এই সব।
পূর্বের লেখায় আমি লিখেছিলাম [১], বিনাকারণে পুলিশ নির্যাতন করে সুরুযের কেল হাড়ই (কলার বৌণ) ভেঙ্গে দেয়নি, কিছুদিন পূর্বে অপারেশনের জায়গাটার পেছনে অমানুষিক শক্তিতে মারার কারণে সুরুয মিয়ার মলদ্বার দিয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রক্তশূণ্যতায় তার মারা যাওয়ার উপক্রম।
সুরুয মিয়াকে পাঠানো হয়েছিল জেলার নামকরা সার্জন আমানুল্লাহ আমানের কাছে। প্রেসক্রিপশনে একগাদা ওষুধের সঙ্গে তিনি পরিষ্কার লিখে দিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নাই। ডাক্তার তো বলে খালাস কিন্তু অপারেশনের টাকা আসবে কোত্থেকে?
এই নিয়ে আমি লেখা দিতে গিয়েও দিলাম না কারণ এখন পাঠক আমার লেখা নিয়ে আতংকে থাকেন। এই রে, ব্যাটা বুঝি আবার ‘ট্যাকাটুকা’ চাইবে।
যাই হোক, দু-দিন পূর্বে সফল ভাবে আমানুল্লাহ আমান সুরুয মিয়ার অপারেশন করেন। এই সার্জনের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি কারণ তিনি সুরুযের প্রতি মমতার হাত অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অপারেশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, ওষুধে ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি গভঅর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এই প্রজন্মের একজন জহরলাল সাহার প্রতি যে যুবকটি না-থাকলে হয়তো সুরুযকে বাঁচানো যেত না।
সব কিছুর শেষে সুরুয এখন ভাল আছেন। হায়, ভাল নেই যে মিডিয়া- ওরে, সব আয়োজন যে মাঠে মারা গেল! মিডিয়ার জন্য আমার অমায়িক সমবেদনা রইল।
সহায়ক সূত্র:
১. সুরুয মিয়ার মৃত্যুর অপেক্ষা: http://www.ali-mahmed.com/2014/12/blog-post.html
...
আপডেট (১২.১২.১৪)
সফল অপারেশনের পর আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সুরুয মিয়া। তার কর্মস্থলের সামনে...।
সুরুয মিয়া মৃত্যুর অপেক্ষায় নামের লেখাটায় [১] আমি লিখেছিলাম: “...এই দীর্ঘ এক মাস পার হওয়ার পরও পত্রিকার লোকজন কোনও প্রকারেই এটা নিয়ে কাজ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ বোধ করেননি। কেন? তারা কী সুরুযের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন? আচ্ছা,সুরুযের মৃত্যু কি তাকে পত্রিকায় স্থান দেবে? আশা করছি দেবে। তাহলে এটা হবে সুরুযের জন্য অতি আনন্দের একটা সংবাদ নিঃসন্দেহে। সুরুয মরিয়া প্রমাণ করিল সে পত্রিকায় চেহারা দেখাবার যোগ্য।...”
কিন্তু আজ আমি অতি দুঃখের সঙ্গে মিডিয়াকে জানাচ্ছি যে সুরুয বাঁচিয়া প্রমাণ করিলেন তিনি মরেন নাই। আফসোস, না-মরে তিনি মিডিয়াকে অনেকখানি বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন। ছি! সুরুয নামের লোকটার বিবেক বলে কিছু আছে বলে তো মনে হয় না! কেননা, সুরুয মিয়া না-মরা পর্যন্ত তো তাকে নিয়ে নিউজ করার কোনও সুযোগ নাই। আর সেটা তো মারা য্ওয়ার পরই কেবল সম্ভব। তখন নিউজ মানে লাইনেজ হিসাবে টাকা। পাল্লা দিয়ে নিউজের লাইন বাড়বে টাকাও বাড়বে। আর যদি অফিস ছবি ধরে ফেলে তাহলে ছবির জন্য আলাদ থোক টাকা।
এ সত্য, সুরুয মিয়ার মৃতদেহের ছবি ছাপাবার কোনও সুযোগ এখানে নাই, এটা তো অপঘাতে মৃত্যু না। এখানে ভিন্ন পথ ধরতে হবে। ক্যামেরা তাক করে রাখতে হবে সুরুয মিয়ার স্ত্রী এবং মার দিকে। মার ছবি তুলতে হয়তো অনেকে আগ্রহ বোধ করবেন না কারণ কোঁচকানো চামড়ার ছবি ভাল আসবে না। ওহো, ক্যামেরা তাক করে বসে থাকলেই তো হবে না বুকফাটা কান্নার ছবি যে বড়ো প্রয়োজন। না-হলে তো পাবলিক খাবে না। কী উপায় তাহলে? মহিলাকে কাঁদাবার চেষ্টা করতে হবে, সবিরাম। প্রশ্নের পর প্রশ্ন ছুড়ে দিতে হবে। চালু প্রশ্ন, ‘স্বামী হারিয়ে আপনার অনুভূতি কি এখন’? এই সব।
পূর্বের লেখায় আমি লিখেছিলাম [১], বিনাকারণে পুলিশ নির্যাতন করে সুরুযের কেল হাড়ই (কলার বৌণ) ভেঙ্গে দেয়নি, কিছুদিন পূর্বে অপারেশনের জায়গাটার পেছনে অমানুষিক শক্তিতে মারার কারণে সুরুয মিয়ার মলদ্বার দিয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রক্তশূণ্যতায় তার মারা যাওয়ার উপক্রম।
সুরুয মিয়াকে পাঠানো হয়েছিল জেলার নামকরা সার্জন আমানুল্লাহ আমানের কাছে। প্রেসক্রিপশনে একগাদা ওষুধের সঙ্গে তিনি পরিষ্কার লিখে দিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নাই। ডাক্তার তো বলে খালাস কিন্তু অপারেশনের টাকা আসবে কোত্থেকে?
এই নিয়ে আমি লেখা দিতে গিয়েও দিলাম না কারণ এখন পাঠক আমার লেখা নিয়ে আতংকে থাকেন। এই রে, ব্যাটা বুঝি আবার ‘ট্যাকাটুকা’ চাইবে।
যাই হোক, দু-দিন পূর্বে সফল ভাবে আমানুল্লাহ আমান সুরুয মিয়ার অপারেশন করেন। এই সার্জনের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি কারণ তিনি সুরুযের প্রতি মমতার হাত অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অপারেশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, ওষুধে ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি গভঅর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এই প্রজন্মের একজন জহরলাল সাহার প্রতি যে যুবকটি না-থাকলে হয়তো সুরুযকে বাঁচানো যেত না।
সব কিছুর শেষে সুরুয এখন ভাল আছেন। হায়, ভাল নেই যে মিডিয়া- ওরে, সব আয়োজন যে মাঠে মারা গেল! মিডিয়ার জন্য আমার অমায়িক সমবেদনা রইল।
সহায়ক সূত্র:
১. সুরুয মিয়ার মৃত্যুর অপেক্ষা: http://www.ali-mahmed.com/2014/12/blog-post.html
...
আপডেট (১২.১২.১৪)
সফল অপারেশনের পর আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সুরুয মিয়া। তার কর্মস্থলের সামনে...।
1 comment:
মিডিয়ার মুখে ছাই ;)
Post a Comment