রামুর প্রবীণ শিক্ষক সুনীল কুমার শর্মাকে তাঁরই ছাত্র সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার সংবাদ পুরনো। এবং পরবর্তীতে সংসদ সদস্য মহোদয় কিরিটি, কুয়াশা, মাসুদ রানাকেও ছাড়িয়ে এটাও প্রমাণ করে দিলেন এই প্রবীণ শিক্ষক ১৯৭১ সালে দেশবিরোধী ছিলেন [১]। ব্যস, এরপর আর কথা চলে না।
একজন আইনপ্রণেতা হয়তো নিজ শিক্ষকের গায়ে হাত তুলতে পারেন কিন্তু এখনও যেহেতু আইন আকারে এটা পাশ হয়নি তাই আমরা, বিশেষ করে আমি আগের নিয়মেই চলব। নিজ শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা তো কল্পনার অতীত তাঁর চোখে চোখ রাখাই যে দায়। সামনে পড়ে গেলে হৃদপিন্ডের ড্রাম কী আমি বাজাই, শ্লা!
যাই হোক, দেশের অনেক বড়-বড় খবরের মাঝে এই খবরটা চাপা পড়ে গেল! এই সংসদ সদস্য মহোদয়ের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি একরামুল হুদা মহোদয় আদালতে এই প্রবীণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করে দিয়েছেন। ওরি বাবা, ‘মানি সাংসদের গেল মান আর একরামুল স্যারের উধাও কান’!
যাই হোক, কেউ মান খোয়ালে মানহানির মামলা করবে এবং যথারীতি ন্যায়ালয় মান ফিরিয়ে দেবে এতে কোনও সমস্যা নেই। এমনিতে আদালত আমাদের বিচার পাওয়ার শেষ ভরসাস্থল! এই নিয়ে আমার বিশেষ গাত্রদাহও নেই।
কিন্তু আমি ভয়ে-ভয়ে আছি। নিজ ছাত্রের হাতে মার খাওয়া অভাগা এই প্রবীণ শিক্ষক যদি এই ১০০ কোটি টাকার মামলা হেরে বসেন তাহলে তো সর্বনাশ এই টাকা শোধ করবেন কেমন করে? ১০০ কোটি! হাজার না, লাখ না, কোটিও না একদম ১০০ কোটি!
আহা, টাকার অংকটা কম হলে নাহয় চেষ্টা করা যেত। আচ্ছা ধরা যাক, খোলা বাজারে মাস্টার মশাইকে পার্ট-বাই-পার্ট বিক্রি করে দেওয়া হলো। মাস্টার মশাইয়ের কিডনি, ফুসফুস, পাকস্থলি, দাঁত কিন্তু… ওহো সবই তো দুর্বল পার্টস কোটি টাকা বাজারদর হবে কী! আরে, সব মিলিয়ে কোটি টাকা হলে আমি নিজেই বুঝি বসে থাকতাম, পাগল। কবে নিজের পার্টসগুলো বিক্রি করে টাকা ক্যাশ করে ফেলতাম।
কিন্তু মাস্টার মশাই থেকে ১০০ কোটি টাকা আদায়ের উপায় কী! আমি তো কোনও উপায় দেখছি না কারও মাথায় কোনও উপায় খেললে সে ভিন্ন কথা…।
No comments:
Post a Comment