মিডিয়ার একজনকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'আচ্ছা, আপনি এই মানুষটাকে চেনেন'? তিনি খুব সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়েছিলেন, 'শিশু-শিশু'!
যার সম্বন্ধে জানতে চেয়েছিলাম, এই শিশু নামের মানুষটা হচ্ছেন, শংকর সাঁওজাল। অল্প কিছু মানুষ থাকেন এঁরা নিজেরা কী সেটা ছাপিয়ে যায় যে এঁরা 'স্বপ্নবাজ' বানাবার মেশিন।
যাই হোক, প্রথম দেখা সম্ভবত ২০০৫-৬ সালে। আমার শরীর থেকে ভক করে সরষে তেলের গন্ধ শহুরে মানুষদের কাছ থেকে লুকাবার আপ্রাণ চেষ্টায় থাকি। তখনও-এখনও!
দেখা হওয়ার কথা না কিন্তু দেখা হল। আমার এক আর্টিস্ট বন্ধুর কল্যাণে। প্রথম দেখায় মনে হল হুম, একটা মানুষ দেখছি।
আমার সঙ্গে তাঁর আচরণ, একজন মানুষের সঙ্গে একজন মানুষের আচরণ যেরকম হওয়াটাই সমীচীন, তেমনটাই। তখনই আমি লক্ষ করেছিলাম মানুষটার চোখভরা সারল্য নিয়ে কেমন একটা শিশুসুলভ ভাব- এই মানুষটা অন্যের যা দেখে তাতেই মুগ্ধ! কোনও আলগা ভান নেই, নির্মেদ।
সেই কবে তাঁর 'কুসুম' নাটকটা দেখেছিলাম। কিন্তু এখনও চোখে লেগে আছে জয়নাল নামের সেই বাবাটা। আহারে-আহারে, যে খাবার কষ্টে তার সন্তান কুসুমকে অন্যের কাছে দিয়ে দেয়। বাবার অক্ষমতার সেই হাহাকার- বুকের ভেতর থেকে পাক খেয়ে উঠে আসো কষ্ট। চোখের পানি মেশে নদীর জলে। আহ খাবার- আহ পেট! আমাদের পেটের ভেতর ঠাসা একপেট আগুন!
কুসুম নাটকটা করার সময় নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আটকা পড়েন এই ফ্রেমে:
এই মানুষটা চোখ এড়ায় না, যে দানব এই গ্রহকে থামিয়ে দিয়েছে তাঁর সঙ্গে কী মিল আমাদের বুনো ফুলের:
এই মানুষটা চোখ এড়ায় না, যে দানব এই গ্রহকে থামিয়ে দিয়েছে তাঁর সঙ্গে কী মিল আমাদের বুনো ফুলের:
মানুষটার যে আবার ছবি ওঠাবার বেজায় শখ:
করবিন অসাধারণ একটা কথা বলেছেন, 'করোনা ভাইরাস আমাদেরকে যা দেখিয়েছে, ...যদি সবাইকে সুরক্ষা না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই ঝুঁকিপূর্ণ '।
এপার-ওপারে কেমন করে মিলে যায় যখন শংকর দা লেখেন,
"একটাই পৃথিবী
বিলুপ্ত সীমানা স্বপ্ন
যুথবন্ধ জীবনে
অসীম প্রকৃতি মাঝে
যেনো সাম্য-সুন্দর ফোটা
বৃন্দ বুনোফুল।
'করোনা'-
সেকি মৃত্যু, নাকি-
উম্মত্ত পৃথ্বী মাঝে
পুষ্পাকৃতি প্রশ্নপত্র
উত্তরেই আঁকা।"
এই প্রজন্ম একজন কলিমুল্লাকে চেনে, এই সময়ের মিডিয়া একজন ছলিমুল্লাকে চেনে কিন্তু একজন শংকর সাঁওজালকে চেনার চেষ্টা করে না। আফসোস, বড়ই আফসোস...।
No comments:
Post a Comment