একজন জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেলেন। এটা আমাদের দেশের জন্য নতুন কোন খবর না। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ছোট-ছোট বাচ্চারা বাচ্চাদের মত আচরণ করে। এরা আমাদের বড়দের অনেক বিষয় বুঝতে চায় না।
তাঁদের গুম হয়ে যাওয়া হারানো স্বজনের ছবি বুকে চেপে প্রেসের সামনে হাজির হয়ে আমাদেরকে যথেষ্ঠ ঝামেলায় ফেলে দেয়। পোড়া চোখের পাপ হয়ে যায়।
কেউ-কেউ কখনও ফেরেন না। তাঁদের স্বজনের কেমন লাগে? এটা বোঝাবার ক্ষমতা আমার কই, থাকলে ভাল হত? আজীবন একটা ট্রমার মধ্যে। অন্তত তাঁর স্বজনের লাশটাও পাওয়া গেলে গড়াগড়ি করে কেঁদে শোকটা খানিকটা সামাল দেওয়া যায়। আর একটা মানুষ না-ফিরলে তাঁর পরিবার যে বৈষয়িক সমস্যর মুখোমুখি হন সে প্রসঙ্গ না-হয় নাই বললাম।
যারা গুম হয়ে যাওয়া মানুষদের খবর আমাদেরকে জানাবেন এমন একজন মানুষ নিজেই হারিয়ে গেলেন! সময়কে কী কোথাও আটকা পড়ে? হ্যাঁ, পড়ে! এখানে এসে সময় স্থির হয়।
তাঁদের গুম হয়ে যাওয়া হারানো স্বজনের ছবি বুকে চেপে প্রেসের সামনে হাজির হয়ে আমাদেরকে যথেষ্ঠ ঝামেলায় ফেলে দেয়। পোড়া চোখের পাপ হয়ে যায়।
কেউ-কেউ কখনও ফেরেন না। তাঁদের স্বজনের কেমন লাগে? এটা বোঝাবার ক্ষমতা আমার কই, থাকলে ভাল হত? আজীবন একটা ট্রমার মধ্যে। অন্তত তাঁর স্বজনের লাশটাও পাওয়া গেলে গড়াগড়ি করে কেঁদে শোকটা খানিকটা সামাল দেওয়া যায়। আর একটা মানুষ না-ফিরলে তাঁর পরিবার যে বৈষয়িক সমস্যর মুখোমুখি হন সে প্রসঙ্গ না-হয় নাই বললাম।
যারা গুম হয়ে যাওয়া মানুষদের খবর আমাদেরকে জানাবেন এমন একজন মানুষ নিজেই হারিয়ে গেলেন! সময়কে কী কোথাও আটকা পড়ে? হ্যাঁ, পড়ে! এখানে এসে সময় স্থির হয়।
এই গ্রহের অসম্ভব ভাগ্যবান একজন মানুষ, সাংবাদিক কাজল। গুম-হারিয়ে যাওয়া এই মানুষটা ফিরে এসেছেন। ২ মাস চার দিন পর! ভাবা যায়, একটা মানুষ ২ মাস উধাও! নে-ই!
পত্রিকা থেকে আমরা যেটা জানলাম, বিজিবি ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢোকার সময় সাংবাদিক কাজলকে পাকড়াও করেছে। আমাদের বিজিবি খুব চৌকশ! 'রাঙে হাতে' যেটাকে বলে- হাতেনাতে ধরে ফেলেছে।
আমাদের চৌকশ বাহিনীর প্রতি ছোট্ট একটা বিনীত প্রশ্ন, প্রায় ছ-ফুট এই মানুষটা বাংলাদেশ অতিক্রম করে ভারতে গেলেন কেমন করে? ওসময় কী সবার ছুটি চলছিল? নাকি এই মানুষটা ভারতীয় নাগরিক? তাতো না!
এরপর জামিন হল। কিন্তু, একটা কিন্তু রয়ে যায়। তাই তাঁকে ৫৪ ধারায় আটকে দেওয়া হল। ৫৪ ধারাটা কি একটু দয়া করে জেনে নেবেন। আমি বিশেষ জানি না। মারাত্মক অপরাধের ধারা হবে নিশ্চয়ই। খুন-টুন এই টাইপের।
পিছমোড়া করে বাঁধা কেন সাংবাদিক কাজল? এই নিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন।
হুম, তা সমালোচনা করার কী আছে? আহারে, আইন তো সবার জন্যই সমান। এমন একটা দুর্ধর্ষ লোককে যে ডান্ডাবেরি লাগায়নি এটাই তো যথেষ্ঠ। তা এই মানুষটার কাছে কয়টা অস্ত্র বা কলমাস্ত্র পাওয়া গেল? অস্ত্র তো আবার ফুলের মত সাজিয়ে প্রদর্শন করার নিয়ম আছে। সময় অভাবে এই নিয়মটা সম্ভবত মানা হয়নি।
একটা মানুষ একটা দেশ থেকে ৫৪ দিন ধরে হারিয়ে গেল! কোথায় গেল একটা জলজ্যান্ত মানুষ? একটা মানুষকে ৫৪ দিন ধরে লুকিয়ে রাখা কী মামুলি ব্যাপার মনে হচ্ছে? যার মাথায় সামান্য একটু ঘিলু আছে তিনি অনুমান করতে পারবেন কী অসম্ভব ভয়ংকর একটা ব্যাপার! আর যাদের ঘিলু পেছনে তাদের এই বিষয়টা বোঝার প্রয়োজন নেই।
যে মানুষটার স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে ৫৪ দিন সেই মানুষটাকে ৫৪ ধারায় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হল। তাও কোথায়, যশোরে! করোনাকালে! আহারে, করোনা যে এসেছে সে তো বুঝেশুনেই এসেছে। আর ৫৪ ধারার বিষয়টা আমি এখন বুঝতে খানিকটা বুঝতে পেরেছি ৫৪ দিন ধরে হারানো মানুষের জন্য প্রতিদিন ১ ধারা। সহজ হিসাব!
কিন্তু না, ধারা তো আর ও বাকী আছে:
এমন একটা দুর্ধর্ষ মানুষ কলমাস্ত্র নিয়ে কোথায়-কোথায় না কী-কী করেছেন সেইসব খবর আসা শুরু হয়েছে নগর-বাগ-চর থেকে। আরও তিনটি মামলা ঠুকে দেওয়া হল- শেরেবাংলা নগর, হাজারিবাগ, কামরাঙ্গির চর! কেবল বাকী রয়েছে নিজের ঘর। এই সাংবাদিকের ঘর থেকেও একটা মামলা ঠুকে দেওয়ার খবর পেলে অন্তত আমি অবাক হব না। এই দেশে সবই সম্ভব।
যাই হোক, দিন গড়ায়-রাত গড়ায় আমরা যখন নিরাপদ আশ্রয়ে হালুয়াপুরি খেতে-খেতে 'জায় হো-জায় হো' করছি তখন এই মানুষটার স্বজনদের কী দিন-রাত বলে আদৌ কিছু ছিল?
সাংবাদিক কাজলের স্বজনদের কষ্ট যাদের বুঝতে সমস্যা হয় তারা আমেরিকার হাঁটুর নীচে জর্জ ফ্লয়েড নামের ওই মানুষটার কাছ থেকে জেনে নিয়েন। 'মামা, আই কান্ট ব্রিদ'। তারপরও বুঝতে সমস্যা হলে সাংবাদিক কাজল এবং তার স্বজনদের প্রতিটা দিনের হিসাব করে এক সেকেন্ড শ্বাসটা একটু আটকে রাখেন। না-না, এতে খানিকটা কষ্ট হবে। একটু কমিয়ে দেওয়া যাক। এই-ই মাত্র ৬০, ৬০ সেকেন্ড। কেমন? মজা না?
যাই হোক, এরপর জামিনের জন্য আবেদন করা হলেও জামিন হয়নি। কেন হয়নি? আহা, ওই যে চর-টর মামলা হলো না ওই মামলায় সাংবাদিক কাজলকে নাকি আটক দেখানো হয়নি! কী সর্বনাশ, এটাও তো কাজলেরই দোষ। তিনি কী মনে করে যশোর কারাগারে বসে রইলেন? ঢাকা গিয়ে নিজেকে গিয়ে নিজেই গ্রেফতার করলেন না কেন। এখন এই অপরাধের কারণে আরেকটা মামলা ঠুকে দেওয়া তো যেতেই পারে।
কী সর্বনাশ, সাংবাদিক কাজল নাকি দালালের মাধ্যমে এসেছেন।তাঁর বিরুদ্ধে দালালির একটা ধারাও খুঁজে দেখা আবশ্যক।
আমাদের বাতিঘর জাফর ইকবাল মহোদয় ফ্লয়েডকে নিয়ে লিখে কাঁদতে-কাঁদতে শ্যাষ! হেঁচকির মত উঠে গেছে। একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করেছে। তাও একটা-দুইটা না আটটা। ইশ-রে, স্যার কেঁপে-কেঁপে উঠেছেন। গুণে-গুণে আটবার! স্যারের মনে মারাত্মক চিত্তবৈকল্য ঘটেছে। আর ভিডিওটা তিনি দেখেননি কারণ ওঁর মনটা খুব নরোম তো। সব লেখায় এই টাইপের সংলাপই বলেন। তিনি কখনই দেখতে পারেন না। উফ-ফ রে!
তিনি কাজলকে নিয়ে লেখার সময় গুছিয়ে উঠতে পারেননি।অনেকে বলবেন, সব বিষয় নিয়ে তাঁকে লিখতে হবে কেন? তাই তো! তিনি তো আবার স্বপ্নবাজ মানুষ স্বপ্নে ব্যঘাত ঘটে স্বপ্ন টুটে গেলে ঘুঁটে হয়ে যাবে।
1 comment:
করোনা সব আবর্জনা ঝেটিয়ে সাফ করে ফেলুক এই প্রার্থনা।
Post a Comment