আগেও বলেছি আবারও বলি, কে বলেছে যে নগ্ন গাত্রই অশ্লীল! যেমনটা কেউ পাবে গিয়ে দুধ চাইলে তাও অশ্লীল।
আমাদের অনন্ত জলিল নামের মানুষটার অভিনয় নিয়ে এখানে আলোচনা করতে বসিনি। কারণ এই বিষয়ে তিনি আলোচনার উর্ধ্বে! আমার এক ডাক্তার বন্ধু চমৎকার বলেছিলেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এমন কৌতুকময় অভিনয় দেখতে পাওয়া বিরল। বলে কী, হুঁকরে কান্নার দৃশ্যতেও যদি কেউ হেসে গড়িয়ে পড়ে তাহলে তো মুশকিল।
যাই হোক, এটা সিনেমার দৃশ্য না। জলিল সাহেব ২০-২৫ লক্ষ টাকা জাকাত দেবেন। বেশ! এই কারণে তিনি ঢোল বাজাবার জন্য যে ঢোলটা কাঁধে নিয়েছেন এটা তার পেটটাকে ছাড়িয়ে গেছে। কী কুৎসিত একটা দৃশ্য! ঢোল-পেট একাকার! একে তো দান তারপরও এটাকে আবার ধর্মীয় মোড়কে মুড়িয়ে নিয়েছেন, জাকাত।
আমি কুতুক মুনি না [*] তদুপরি সম্পূর্ণ নগ্ন একজন মানুষ দেখাটা আমার জন্য সুখকর বিষয় না। ওয়াক-বমণউদ্রেক! তাই হয়তো প্রকৃতি মানুষ-ছাগল সবাইকে চামড়া দিয়ে মুড়িয়ে দেয় বাকীটা মানুষ মুড়িয়ে নেয় চকচকে কাপড়ে। নইলে ও-য়া-ক!
সিআইপি না ডিআইপি মি. জলিল, কে আপনাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে যে আপনি অসহায় এই সব মানুষদের সম্মান নিয়ে খেলবেন? এই যে এঁদের নাম এবং ফোন নাম্বার জনসমক্ষে নিয়ে এসেছেন এর মানে আপনি বোঝেন? (আপনি পুরো নাম্বার ছাপিয়েছেন আমি ক্রপ করে দিয়েছি।)
লাকি আক্তার নামের মেয়েটা যখন 'হাজারে-বিজারে' কল পাবে ওই কল কী আপনি ধরবেন? এরপর জাঁক করে বলবেন, ইয়ে জলিলের জন্য অসম্ভব কিছুই নাই। এদিকে আবার জলিল সাহেবের ইস্তারি সাহেবাও পিছিয়ে নেই।
ইনার বোধ উদয় হয়েছে। করোনাকালে বাচ্চার ডিব্বার দুধ ব্যাংকক থেকে আসতে পারছিল না। উরি বাবা, কী ডাব্বার দুধ যা ব্যাংকক ব্যতীত পাওয়ার উপায় নেই! যাই হোক, উনার বাচ্চাকে ব্যাঙ-ডাব্বার দুধ খাওয়াবেন নাকি তিমি মাছের দুধ এই বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই। বাচ্চা যার সিদ্ধান্ত তার।
আর একজন লেডির সম্মানে আর কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত রইলাম।
তো, জলিল সাহেবের সঙ্গে আলাপচারিতা চালু থাকুক। শোনেন, জলিল মিয়া দান কেমন করে করতে হয় এটা শেখার ইশকুল নেই কিন্তু শেখা লাগে। আজ আপনাকে একজন মানুষের কথা বলি। তাঁর অনুমতি নাই বিধায় এখানে নামটা উহ্য রাখতে হচ্ছে।
এই ভদ্রলোকের কাছ থেকে আমি মেইল পেয়ে অনেকখানি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। কারণ মানুষটাকে আমি চিনি না। তিনি জাকাতের বেশ কিছু টাকার দায়িত্ত্ব আমাকে দিতে চান বিলি করার জন্য। এমন না যে এই বিষয়টা আমার কাছে নতুন কিন্তু ওরা সবাই আমার পরিচিত গন্ডির মধ্যে ছিলেন। কিন্তু এই ভদ্রলোককে তো আমি একেবারেই চিনি না।
আমি উত্তরে বলেছিলাম, 'আপনি তো আমাকে চেনেন না! আমাকেই কেন বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিতে চাচ্ছেন'?
এই মানুষটার কারণে ২০জন মানুষের খানিকটা হলেও উপকার হয়েছিল। এঁরা কারা? করোনাকালের আগে যিনি পত্রিকা বিলি করতেন। যে মেয়েটিকে আমি বছরের-পর-বছর দেখেছি সেলাই করে সংসার চালাতে।
এঁরা না-খেয়ে থাকবেন কিন্তু এঁদের তো বললেই রিলিফের লাইনে দাঁড়াতে পারবেন না। কেন পারবেন না? প্রার্থনা করি, এটা বোঝার ক্ষমতা যেন সবার থাকে।
এঁরা না-খেয়ে থাকবেন কিন্তু এঁদের তো বললেই রিলিফের লাইনে দাঁড়াতে পারবেন না। কেন পারবেন না? প্রার্থনা করি, এটা বোঝার ক্ষমতা যেন সবার থাকে।
যাই হোক, কিছু-কিছু দৃশ্য আছে যা বোঝানো যায় না কেবল অনুভব করা যায়। আফসোস, ওই সহৃদয় মানুষটা এই সমস্ত দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত হলেন। তবে, আই বেট, তিনি যদি আমার সঙ্গে উপস্থিত থাকতেন তবে ২০বার-ই তাঁর চোখ ভিজে আসত...।
* কুতুক মুনি: কুতুক মুনির ঘটনাটা সবাই নিশ্চই জানেন। তবুও বলি:
(স্বর্গে উর্বশী স্ট্রিপ-টিজ করছেন। 'স্ট্রিপ-টিজ' এটার অর্থ আবার আমার কাছে জানতে চাইবেন না। )
তারপর উর্বশী ক্রমশ তাঁর সমস্ত আবরণ আর আভরণ খুলে ভূমিতে নিক্ষেপ করলেন। ...
সভাস্থ দেবগণ দেবর্ষিগণ ও মহর্ষিগণ বললেন, সাধু-সাধু।
(কুতুক মুনি এসেছেন দিগম্বর হয়ে। আজানুলম্বিত শ্মশ্রুই তাঁর বসন)। কুতুক মুনি বললেন, থামলে কেন উর্বশী আরও নির্মোক (খোলস বা বসন) ত্যাগ করো।
নারদ বললেন, আর নির্মোক কোথায়? উর্বশী তো সমস্তই মোচন করেছে!
কুতুক বললেন, ওর সর্বগাত্রে একটি পদ্মপলাশতুল্য শুভ্রারক্ত মসৃণ আবরণ রয়েছে।
(নারদ) আরে ও তো ওর গায়ের চামড়া!
(কুতুক) ওটাও খুলে ফেলুক।
-নির্মোক নৃত্য/ পরশুরাম
No comments:
Post a Comment