আমার কয়েক হাজার লেখালেখির মধ্যে ডাক্তারের কালো-কালো হাত নিয়ে যে-সমস্ত লেখা লিখেছি তার সংখ্যা জিরো পয়েন্ট ব্লা-ব্লা হবে কি না সন্দেহ। অন্য পেশার লোকজনকে নিয়ে লেখলে সমস্যা নাই কিন্তু ডাক্তারকে লিখলে ডাক্তার স্যাররা ভারী 'নাগ' করেন। নাক দিয়ে ধোঁয়া বের হয়। পারলে সাদা-সাদা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে ফেলেন। বড় চিত্র-বিচিত্র! এমনিতে আমার খুব ভাল বন্ধুদের অনেকেই আবার ডাক্তার।
যাই হোক, এ সত্য এঁরা ভারী মমতায় আমাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। ভিডিও-ক্লিপের এই মানুষটার হৃদয়সংক্রান্ত জটিলতা। সহৃদয় ডাক্তার এই মানুষটার ওষুধ লিখে দিলেন কিন্তু ওষুধগুলো মানুষটাকে দেয়াটা হয়ে উঠছিল না কারণ তিনি যখন আসেন তখন আমি থাকি না আবার আমি যখন থাকি তিনি আসতে পারেন না। দেরি হয়ে যাচ্ছে বিধায় অবশেষে আমি এখানে রেখে দিলাম। এখানে যে ছেলেটা থাকে তাকে দায়িত্ব দিলাম ওষুধগুলো মানুষটা এলে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
সে ঠিকঠিক দায়িত্ব পালন করল। পরে এও জানাল ওই মানুষটা প্রকাশভঙ্গির তীব্রতা নিয়ে। এই জায়গাটা ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। জানি না কেন আগ্রহ হল, খুব। ভিডিও ক্লিপটা দেখলাম। ঝিম মেরে রইলাম। মাথায় সব জট পাকিয়ে যায়। আহারে-আহারে, এমন একটা দৃশ্য না-দেখে মরে যাওয়াটা কোন কাজের কাজ না! কারণ এটায় কোন খাদ নেই। 'নির্মেদ'! এই মানুষটার এক রত্মি ভান নেই কারণ তাঁর জানার কারণ নেই যে এখানে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা চালু আছে এবং রিপ্লে করে এটা দেখাও সম্ভব।
ওষুধ চলল দিনের-পর-দিন। ডাক্তার সাহেবকে আমি ক্ষণে ক্ষণে বিরক্ত করি। কিন্তু তিনি বিরক্ত হন না। প্রয়োজনে ওষুধ বদলে দেন। এটা-সেটা উপদেশ দেন। ভরসা দেন।
মানুষটা অন্য ভুবনে যাত্রা করেছেন- মারা গেছেন। তিনি মারা যাওয়ার পূর্বে ডাক্তার সাহেবের ভালবাসায় জড়াজড়ি হয়ে মারা গেছেন এটা অন্তত জেনে গেছেন...।
No comments:
Post a Comment