অতীতের অভিজ্ঞতা ধার করে বলি, গু শব্দে সূক্ষরূচির পাঠকের গা গুলালে গু-এর জায়গায় সু পড়বেন। ওরে, দেখো দিকি কান্ড, গুন্টার গ্রাস নোবেলকে এক বস্তা গু বললে সমস্যা হয় না বা মার্কেজের 'নো ওয়ান রাইট টু কর্ণেল'-এ কর্ণেলকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, খাবা কি? কর্ণেলের উত্তর, গু।
যাই হোক, অসাধারণ এই লেখাটি লিখেছেন, Mohammad Abul Kalam Azad (https://www.facebook.com/ mohammad.a.azad.7)
"আমরা যতবার হাগি, একটু করে পৃথিবীকে পাল্টে ফেলি। হাসেন যত ইচ্ছা, কিন্তু ঘটনা সিরিয়াস। হাগা
বিষয়টাতে আমাদের অনেক ধরণের অবস্থান আছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে বিব্রত
হওয়া। মানুষ নিজের হাগু নিয়ে বিব্রত। অনেকে তো তার প্রেমিকা যে হাগে এ
বিষয়টাতেও বিব্রত, অন্তত প্রেমের প্রথমদিকে। অধিকাংশ স্বর্গেই মানুষ হাগে না।
ইয়োরোপের
নন্দনতত্ত্বই, মিলান কুন্ডেরার মতে, গুকে গোপন করার উপর দাঁড়িয়ে আছে। গু
গোপন করার জন্যই তারা কমোডকে ফুলের মতো করে তৈরী করে। তবে
জিজেকের মতে, যে পাইপ দিয়ে গু যায় তার অবস্থান ও আকারের ভিন্নতা আছে
ইয়োরোপের বিভিন্ন দেশে। ট্রাাডশনাল জার্মান কমোডে গর্তটা থাকে সামনের
দিকে। আপনার গু আপনার চোখের সামনেই থাকবে। ফলে, আপনার গু কতটা স্বাস্থ্যকর
তা নিয়ে গবেষণা করতে পারবেন। ফ্র্যাঞ্চ টয়লেটে গর্তটা পেছনের দিকে থাকে,
দৃষ্টির আড়ালে, গু যাতে নিমেষেই উধাও হয়ে যায়। ইংলিশ কমোড এ দুইটার
সংশ্লেষে তৈরী। এখানে গর্তটা মাঝামাঝি, সাইজে বড়, ও পানি ভর্তি। গু এখানে
ভাসমান, দৃশ্যমান তবে জার্মানদের মতো তা পর্যবেক্ষনের নিমিত্তে নয়।
জিজেকের
মতে, তাদের কমোডের ভিন্নতা শুধু ব্যবহারিক নয়, মানুষের সাথে গুয়ের সম্পর্ক
কি হবে -এ ধরনের একটা মতাদর্শও এখানে হাজির আছে। এটা জাতি হিসাবে তাদের
মেজাজেরও প্রতীক। জিজেক বলে, কমোডের ভিন্নতা থেকেই জার্মানদের রক্ষণশীলতা,
ফ্র্যাঞ্চদের বৈপ্লবিকতা আর ইংরেজিদের উদারনীতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
কমোড
হয়ে গু শহরের নিচেই থাকা পাকস্থলীর মতো জটিল ও প্যাচানো সুয়েজ পাইপে জড়ো
হয়। লন্ডনে রানীর গু যে পাইপ দিয়ে যায়, তাতে ফ্ল্যাগ লাগানো আছে। নীল রক্তওয়ালা রানীর
গুকে স্যালুট দেওয়ার বিধান আছে। স্যালুট খেয়ে রানীর গু অন্যসব লাল রক্তওয়ালাদের
গুয়ের সাথে মিলিত হয়ে টেমস নদীতে গিয়ে পড়ে।
ওই গুদের সঙ্গে চলে যায় মানুষের খাওয়া এন্টিবায়োটিক, এন্টিডিপ্রেসেন্ট,
এন্টিহিস্টামিন, পেইনকিলার, জন্ম নিরোধক বড়িতে থাকা কৃত্রিম এস্ট্রোজেনের
অবশেষ- সুয়েজের পানিকে সব রকম শোধনের পরেও। আরও থাকে অবৈধ ড্রাগ, যেমন,
কোকেন, এক্সটেসি, কিস্টাল ম্যাথ ইত্যাদি। টেমস
নদী থেকে এক বোতল পানি নিয়েই গবেষকরা বলে দিতে পারেন, লন্ডনের মানুষ কি কি
ড্রাগ খাচ্ছে ও কি পরিমাণে। ব্রাক্সিটের পর তাদের ড্রাগ গ্রহণে কি
পরিবর্তন এসেছে তাও এখান থেকে বলে দেওয়া যায়।
শুধু
ইংল্যান্ড নয়, বিশ্বের সব বড় শহরের নদীর পানিই ঔষদায়িত, মাদকায়িক। এই নদীর
পানি পরিশোধন করেই আমরা আবার খাই। ব্যবহৃত হচ্ছে এমন কোনো রকম পরিশোধনেই
এগুলো যায় না। তাই হলফ করে বলতে পারবেন না, আপনি কখনো কোকেন, বা গর্ভ
নিরোধক পিলের মধ্যে থাকা হরমোন খান নাই। কিন্তু তা এত কম পরিমাণে, আপনি
হয়তো বোঝেন নি। কিন্তু আপনার কাছে যা সামান্য, জলজ প্রাণের কাছে তা সামান্য
নয়।
সুইডেনের গবেষকরা
মাছের উপর নদীর পানিতে মিশে থাকা ট্রাংকুলাইজারের কি প্রভাব পড়ে তা দেখেছে।
তারা দেখলেন, এটা মাছকে শান্ত না-করে বরং হাইপার একটিভ করে দেয়।
ট্রাংকুলাইজারে থাকা মাছ তার সমাজ থেকে একা হয়ে পড়ে। সে ঝুকি বেশি নেয়, ও
নিজের বিপদ ডেকে আনে।
নদীতে
যে পরিমান কোকেন থাকে সে পরিমাণ কোকেন মেশানো পানিতে ঈল মাছ রেখে পরীক্ষা
করা হয়েছে। দেখা গেছে, কোকেন খেয়ে হাই হয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের
পেশি ফুলে যায়, হরমোন পালটে যায়। ডোপামিনের লেভেল হাই থাকার কারণে
সেক্সুয়াল ম্যাচুরিটি আসে না। ১০ দিন রিহ্যাবে থাকার পরেও তাদের শরীরে এর
প্রভাব ছিল।
বাদামী
ট্রাউটের উপর ক্রিস্টাল ম্যাথের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা।
তারা দেখলেন, এর প্রভাবে ট্রাউটের স্বাভাবিক বিচরণ পালটে যায়। তারা এই
ড্রাগ এনজয় করা শুরু করে ও এক সময় এডিক্টেড হয়ে যায়। তারা যেখানকার পানিতে
ড্রাগের পরিমান বেশি সেখানেই ভীড় জমায়। তাদের এই এডিকশন কয়েক জেনারেশন
পর্যন্ত বাচ্চাদের কাছে উত্তরাধিকার সূত্রে যেতে পারে। পানিতে থাকা জন্ম নিরোধক ট্যাবলেটের অবশিষ্ট কৃত্রিম এস্ট্রোজেন পুরুষ ব্যাঙকে নারী বানিয়ে দেয়। আমেরিকার নদীতেও ইন্টারসেক্স মাছ পাওয়া গেছে। তারা পুরুষ কিন্তু অপরিণত ডিম বহন করছিল। আর এই সবকিছুই হচ্ছে আমাদের ঔষদায়িত, মাদকায়িক হাগুর কারণে। এ জন্যেই বললাম: আমরা যতবার হাগি, একটু করে পৃথিবীকে পাল্টে ফেলি।" -Mohammad Abul Kalam Azad
No comments:
Post a Comment