Search

Saturday, January 1, 2022

...পিকচার টেলস আ স্টোরি!

প্রত্যেক ছবির পেছনে একটা গল্প থাকে। আমার একটা লেখা ছিল, 'ছবির পেছনে গল্প' []। অসম্ভব স্রোতের মাঝে নৌকায় করে ছবি উঠাবার চেষ্টা করছিলাম। তাও কী ক্যামেরা- ক্যামেরা নামের কলন্ক! ৩.২ মেগা-পিক্সেলের এন-৭৩ টাইপের মোবাইল ফোন (কিন্তু এটা দিয়েই কিছু ছবি উঠিয়েছি, ভয়ংকর সুন্দর [])। সঙ্গে মিডিয়ার কিছু লোকজন ছিলেন। ওদের সঙ্গে আবার কামানসম ক্যামেরা। এরা সব বাদ দিয়ে আমার ছবি নিয়ে কখন কস্তাকস্তি করছিলেন টেরটিও পাইনি।

আমাকে নিয়ে কেন পড়লেন কে জানে। আমি খুব ভাল সাঁতার জানি না। এমনিতে আমি ভেসে গেলে চমৎকার একটা স্টোরি হত, তিন টাকা দামের কলমবাজের 'পানিসমাধি'। আহারে, পানিসমাধি দূরের কথা জলসমাধিও হলো না! তবে আমার ওই ছবি ওঠাবার গল্পটা ভয়াবহ কারণ আমি এতই মগ্ন হয়ে ছবি উঠাচ্ছিলাম যে হুশ ছিল না। ওসময় এক-পা পদত্যাগ করতে-করতে বেঁচে গিয়েছিলাম। 'ইঞ্জিনের নৌকা' নামের ওই কানফাটানো জিনিস যার প্রপেলারে আমার পা জড়িয়ে যাচ্ছিল প্রায়। মাঝি নামের সহৃদয় মানুষটার কল্যাণে বেচারা আমাকে পদত্যাগ করতে হয়নি!

কিন্তু এই ছবিটার গল্প বলতে খুব একটা আরাম বোধ করছি না। আমি আমার পরিবারের কোনও প্রসঙ্গ পারতপক্ষে লেখায় আনতে চাই না। খুব ছোট্ট একটা পরিবার আমার। কেউ জানতে চাইলে যা সত্য তাই বলি, আমার এক ছেলে এক মেয়ে এক বউ। লোকজন সত্যটাকে রসিকতা কেন মনে করেন কে জানে!
অনেক লেখক মহোদয়গণ এই কাজটা হরদম করেন পাড়ার ছোকরার মত- আমি লেখক নই বলেই আমার এই সব হ্যাপা নেই। আমাদের দেশের একজন নামকরা লেখক সারাটা জীবন আমার বউ পরীর মত সুন্দর, আমার বউ পরীর মত সুন্দর এই বলে-বলে আটকে রাখা শ্বাস ছাড়লেন শেষ বারের মত। কে বলে কেবল নগ্ন গাত্রই অশ্লীল! অশ্লীলতার আছে ভিন্ন-ভিন্ন মাত্রা!

যাই হোক, একটা বাড়িও কারও-কারও জন্য অপেক্ষা করে। স্বপ্নের কারিগর [] নামের যে-মানুষটার জন্য এ অপেক্ষা তাঁর আর আসা হয় না! শনি যায় মঙ্গল যায়, মাস গড়ায়, বছর। বছরও গড়াগড়ি খায়। বছরের-পর বছর চক্রাকারে এটা চলতেই থাকে। আমি বুঝে গেলাম, এন্ড অভ দ্য ডে, এটা আমার নিজের লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ার মত একটা ঘটনা হবে বটে। এটা আমি বিলক্ষণ লক্ষ করেছি ভয়ংকর পাজিও লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লে লোকজন আসে- তাকে নিয়ে আনন্দগাথা লেখা হয়, তিনি বড় ভাল লোক ছিলেন। আহা, লম্বা হয়ে শুয়ে-শুয়ে কারও কাছ থেকে এটা শোনাটা কোন কাজের কাজ না।

কিন্তু কোন-এক চিত্রবিচিত্র কারণে এই মানুষটার মাথায় খানিকটা সমস্যা দেখা দিল। ওদিন অফিসের নাম করে ঠিকই বের হলেন। কেবল একাই রওয়ানা দিলেন এমন না অনেকটা নিজের বউকে নিজেই ভাগিয়ে নিয়ে চলে আসলেন। আমি মনে মনে বলি, প্রয়োজনে অন্যের বউকে ভাগিয়ে নিয়ে আসেন, তবুও আসেন। আমার এখানে দুপুরে খাওয়ার কথা। ফোন করে বলেন, রাস্তায় হাসের মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে ফেলেছি। আমি আবারও বলি অবশ্যই মনে মনে, প্রয়োজনে তিমি মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খান, তবুও আসেন। তিনি যদি বলতেন, ইয়ে, ঘটনা হয়েছে কী শোনেন গাড়ির একটা চাকা চারকোনা হয়ে গেছে। গাড়িকে হাঁটিয়ে নিয়ে আসব। অনেক টাইম লাগবে। ঠিক নাই দু-চারদিনও লাগতে পারে। যথারীতি আমি বলতাম, আচ্ছা, গাড়িটাকে কান ধরে হাঁটিয়ে নিয়ে আসেন, তবুও আসেন।

মানুষটা বড্ড শীতকাতুরে। ফায়ারপ্লেসের কাছ থেকে নড়েনই না। নচ্ছার চুলার উম ছড়িয়ে পড়ে আমার চোখে। এটা দেখাটাও একটা সুখ। এটা শব্দ দিয়ে লিখে ফেলা আমার কম্ম না। আহারে, ছোট-ছোট সুখ ছাড়ায় অসুখ।

তো, তিনি সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন এন্তার জিনিসপত্র যার চালু নাম উপহার। এর মধ্যে এই ছবিটাও। কাঠের মধ্যে লেজার দিয়ে পুড়িয়ে খোদাই করা...।

 

সহায়ক সূত্র:

১. ছবির পেছনের গল্প: https://chobiblog.blogspot.com/2011/09/blog-post.html

২. শিরোনামহীন: https://chobiblog.blogspot.com/2011/01/blog-post_24.html

৩. স্বপ্নের কারিগর: https://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_13.html  

No comments: