বৃটেনের রানি মারা গেছেন। মারা যাওয়ার সময় লুট করে নিয়ে যাওয়া কোহিনুর তার মাথায় ছিল কিনা সেটা জানা যায়নি। জানা গেলে ভাল হত। কারণ কোন জাঁকালো অনুষ্ঠানে রাজমুকুটে সগর্বে এটা পরা হয়। বিদায়অনুষ্ঠানেও চোরের মার গলায় চুরির জিনিস থাকাটাই সমীচীন!
বেচারারা! একালের দাস, একালের দাসরা এখনও ভুলতে পারেনি তাদের মালিকিনকে! এই দাসপার্টির প্রতি আমার করুণা। আহা, দাসত্বের বীজ যে রয়ে গেছে ডিঅক্সিরিবো নিউক্লিক এসিডে মিলেমিশে একাকার হয়ে।কেবল কোহিনুরই না এই গ্রহের খুব অল্প জায়গাই আছে যেখানে এরা লুটপাট চালায়নি। লুটের মাল ফেরত দেওয়ার বিষয় এলে এরা বধির হয়ে যেত। একদম সাফ না।
আপনি কল্পনা করুন, কারও শার্ট-প্যান্ট-চশমা-ঘড়ি-গাড়ি-বাড়ি-বউ এমনকি আন্ডার গার্মেন্টস পর্যন্ত চুরি-ডাকাতির অথচ ওই লোকটা সগর্বে এই সব দেখিয়ে-দেখিয়ে দিনের-পর-দিন, বছরের-পর-বছর পার করে দিচ্ছে। আবার সেই লোকটাই দাবী করছে সে অতি সভ্য এবং তার রক্ত নাকি নীল। ভাবা যায়?
আহারে, এরাই আবার আমাদেরকে শেখাবে মানবতা। এরা যে কেবল দাস ব্যবসা করেছে এমনই না মানবিক প্লায়ার্স আবিষ্কার করেছিল যেটা দিয়ে এদের কথিত ব্লাডি নেটিভ বা দাসদের অন্ডকোষ ফাটিয়ে দিত:
ভাবা যায়, কেবল ট্রেনের ভেলকি লাগিয়ে নিয়ে গেছে স্রেফ ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার!
তখন সেকালের দাসদের সে-কী উচ্ছ্বাস! রাজায় কইছে ইয়ে ভাই আনন্দের আর সীমা নাই! ব্রিটিশরাজ সর্বশক্তিমান-জয় ইংরেজ-জয় ভিক্টোরিয়া-ব্রিটিশ শাসনের বিকল্প নাই-ভারতবর্ষের প্রজাদের প্রতি ব্রিটিশরাজের সদয় উপহার...।
আহারে, কত সহজে আমরা ভুলে গেছি কালাপানির কথা!
রাজা তুই ল্যাংটা এটা বলার মাঝে-মাঝে চেষ্টা হয়। কিন্তু দাসত্বের শেকল আটকে ফেলে। অস্ট্রেলিয়ায় Lidia Thorpe সেনেটর হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় রানির নামের পূর্বে 'কলোনাইজিং হার ম্যাজিস্ট্রি ' শব্দটি যোগ করেন। চারদিকে শোরগোল উঠে। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট লেখাই পড়তে হয়। অনেকগুলো দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ারও প্রধান রানি। এবং সে ইচ্ছা করলে সবাইকে বরখাস্ত করতে পারে। যাই হোক, আমরা কম 'লেকাপড়া জানা লুকজনেরা' এতো বিষয় বুঝি না কেবল বুঝি কেউ জুতা ছুড়ে মেরেছে কিন্তু জুতা লাগেনি। অতএব আনন্দই আনন্দ বেদনার কিছু নেই!
অনেকে দাজ্জালের জন্য অপেক্ষায় আছেন কিন্তু ব্রিটিশ মিউজিয়ামে যে কাবাশরীফের জিনিসপত্র লুটে নিয়ে গেল সেই দাজ্জালকে চোখে পড়ে না? ওই দাজ্জালকে ধরা দরকার না? ওরে, হিজরতবান্দা, একবার লন্ডন অভিমুখে হিজরত করে দেখান না।
ওহো, আমাগো মিডিয়া, দাস-মিডিয়া! দাস-মিডিয়াদের দাসত্বের কেবল এই একটা উদাহরণই যথেষ্ঠ হবে:
বটে রে! ব্ল্যাকহোল-কৃষ্নবিবর নাকি সব লুটে নেয় মানে সব শুষে ফেলে। যা পায় তাই খায়, বর্জ্যও! আফসোস, আজ সেই ব্ল্যাকহোল নিজেই লুট হয়ে গেছে...!
...
'বিদায়অনুষ্ঠানেও চোরের মার গলায় চুরির জিনিস থাকাটাই সমীচীন!', লেখার শুরুতে এটা লিখেছিলাম হালকা চালে কিন্তু সত্যি-সত্যি এটা ঘটবে এটা আমার কল্পনার বাইরে।
ইংল্যান্ডে থাকেন আমার এক বন্ধু বলছিলেন, এদের চুরি-চামারি নিয়ে বিশ্বব্যাপি যে নিন্দা হচ্ছে এই সব এরা গায়ে মাখছে না। গ্রামের একটা চালু কথা আছে, 'ল্যাংটার কীসের সমাজ, কীসের নমাজ', ...!
No comments:
Post a Comment